স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে খোলা চত্বরেই প্রসব হল রবিনা বর্মণের। —নিজস্ব চিত্র।
অন্তঃসত্ত্বার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসায় আতঙ্কে তাঁর কাছে এগিয়ে আসেননি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোনও কর্মী। শনিবার ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। শেষমেশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে খোলা চত্বরেই প্রসব হল। গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ধূপগুড়ির ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রবিনা বর্মণের শনিবার সকালে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। তাঁকে ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে নিয়মমাফিক কোভিড পরীক্ষা করা হয়। তাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসে বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। অভিযোগ, এর পর আতঙ্কে রবিনার কাছে আসেননি হাসপাতালের কর্মী বা অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। প্রসব যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল চত্বরেই সন্তানের জন্ম দেন রবিনা।
এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ রবিনার বাবা প্রসেনজিৎ বর্মণ-সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাঁদের দাবি, এ ভাবে প্রসব হওয়ায় মা ও সন্তানের জীবন সংশয় হতে পারত। প্রসেনজিৎ বলেন, “শুক্রবার থেকে মেয়ের প্রসব বেদনা হচ্ছে। আজ (শনিবার) হাসপাতালে নিয়ে এলে সকাল থেকে কেউ আসেননি। ডাক্তার বলেন, মেয়ের গর্ভের সন্তানের ওজন বেশি থাকায় জলপাইগুড়ি হাসপাতালে রেফার করছি। আমরা গরিব মানুষ। জামাই কেরলে কাজে গিয়েছে। গাড়িঘোড়া বন্ধ, তাই হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নিতে ডাক্তারকে হাতেপায়ে ধরে অনুরোধ করি। কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর থেকে একটাও অ্যাম্বুল্যান্স এগিয়ে আসেনি। হাসপাতালের বাইরেই সন্তান প্রসব হয়েছে।”
গোটা ঘটনায় অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, “গর্ভের সন্তানের সাইজ বড় হওয়ায় ওই মহিলাকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা মহিলাকে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন। দেরি হওয়ায় এখানেই পুত্রসন্তান প্রসব হয়। তার পর মা ও সন্তানকে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে আসি। দু’জনেই সুস্থ থাকলেও তাঁদের জলপাইগুড়িতে রেফার করা হয়েছে।”