—প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরেছে। বাজারে এসেছে প্রতিষেধক। করোনা নিয়ে বেড়েছে সচেতনতা প্রচারও। কিন্তু ছুঁৎমার্গ যাচ্ছে কই! আর তার জেরে মৃত্যুর পরে বাড়ির শৌচাগারেই টানা ১৫ ঘণ্টা পড়ে রইল করোনা আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ার দেহ। অভিযোগ, তাঁর ছেলে জানানো সত্ত্বেও দেহ নিয়ে যেতে এলাকাবাসী থেকে প্রশাসন— কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। শেষমেশ ব্লক প্রশাসনের লোক বাড়িতে এলেও পিপিই পরে মায়ের দেহ গাড়িতে তুলতে হয়েছে ছেলেকেই।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আশুরালি গ্রামের বছর পঞ্চান্নর ওই প্রৌঢ়া করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায় রবিবার। পেশায় পরিচারিকা ওই প্রৌঢ়া গৃহ নিভৃতবাসে ছিলেন। তাঁর ছেলে জানান, সোমবার রাত ১২টা নাগাদ বাড়িতেই শৌচাগারে পড়ে মা মারা যান। করোনাতেই মৃত্যু কিনা নিশ্চিত না হলেও প্রৌঢ়া সংক্রমিত হওয়ায় কেউই এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। মহিলার ছেলে বছর বাইশের ওই যুবক বলছেন, ‘‘রাতেই আশা কর্মীদের জানাই। ওঁরা আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত হন।’’ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রৌঢ়ার দেহ শৌচাগারেই পড়ে ছিল। বিকেল ৩টের দিকে কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন একটি শববহনকারী গাড়ি পাঠায়। কিন্তু গাড়ি এলেও দেহ তুলতে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষে চালকের সঙ্গে মৃতার ছেলেই পিপিই কিট পরে মায়ের দেহ গাড়িতে তুলে দেন।
কোলাঘাটের বিডিও তাপস হাজরা বলেন, ‘‘আমি এ দিন সকাল ৯টায় আশাকর্মীদের থেকে খবর পাই। গাড়ি পেতে দেরি হয়েছে। দেহ তোলার কাজ করেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। কিন্তু
নির্বাচনের কারণে তাঁরা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। আবার সক্রিয় করার কাজ চলছে।’’ করোনা রুখতে স্বাস্থ্য বিধি মানা জরুরি। কিন্তু সংক্রমিতের পরিবারের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দেওয়াটা কাম্য নয় বলে জানাচ্ছেন কোলাঘাটের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শিবশঙ্কর খান। বলেন, ‘‘এত প্রচারের পরও মানুষের মনের আঁধার যাচ্ছে না। আরও সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’’