গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে দৈনিক সুস্থতায় সংখ্যা আগের থেকে বাড়লেও করোনায় সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ ফের বাড়ল। তবে কোভিড থেকে সেরে ওঠা রোগীর সংখ্যাও পার করেছে ৪ হাজারের গণ্ডি। সেই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের জেরে মৃতের সংখ্যা কমেছে। কোভিড টেস্ট কম হলেও ১ দিনে আক্রান্তের সংখ্যাও আগের থেকে কম। যদিও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমণের পরিসংখ্যান।
স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, এ রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯০৭ জন। যা রবিবারের থেকে কম। গত কাল ৩ হাজার ৯২০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এ রাজ্যে ৪ লক্ষ ৯ হাজার ২২১ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। যদিও এর মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। এখন পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৫০ জন কোভিড রোগী পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। ফলে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ২১।
করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গত কালের থেকে কমলেও সুস্থতার হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ বেড়েছে। এ দিন তা দাঁড়িয়েছে ৮.৮১ শতাংশে। গত কাল তা ছিল ৮.৬৮ শতাংশ। প্রতি দিন যত সংখ্যক টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যতটা নিম্নমুখী হবে, ততই স্বস্তিদায়ক। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪৪ হাজার ৩৪৬টি কোভিড টেস্ট হয়েছে। গত কাল ৪৫ হাজারেরও বেশি টেস্ট হয়েছিল। তবে এ দিন টেস্ট কম হলেও ‘পজিটিভিটি রেট’ বেড়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রবণতায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি মমতার
আরও পড়ুন: পরশু থেকে লোকাল: শিয়ালদহ, হাওড়ায় ৬১৫টি ট্রেন চলবে
(গ্রাফে হোভার টাচ করলে দিনের পরিসংখ্যান দেখা যাবে)
সংক্রমণের হার বাড়লেও স্বস্তি জোগাচ্ছে দৈনিক সুস্থতার হার। এ দিন তা বেড়ে হয়েছে ৮৯.৮৯ শতাংশ। গত কাল তা ছিল ৮৯.৬৭ শতাংশে।
সুস্থতার হারের মতোই বেড়েছে কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফের ৪ হাজারের বেশি রোগী সেরে উঠেছেন। এ দিন ৪ হাজার ৩৯৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
কোভিডে দৈনিক মৃত্যুও আগের থেকে কমেছে। গত কাল ৫৯ জন কোভিড রোগীর মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন তা সামান্য কমলেও ৫৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফে হোভার টাচ করলে দিনের পরিসংখ্যান দেখা যাবে)
কলকাতার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমণের প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী। এ দিনের বুলেটিনেও সেই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গোটা রাজ্যের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় সবচেয়ে বেশি ৮৬১ জনের মধ্যে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫২ জন। এ ছাড়া, দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৩৮), নদিয়া (২৩২), হাওড়া (২২৩), হুগলি (২০২), পূর্ব মেদিনীপুর (১৫৮), পশ্চিম মেদিনীপুর (১২৮), পূর্ব বর্ধমান (১০৭), পশ্চিম বর্ধমান (১১৮), জলপাইগুড়ি (১৩১) এবং কোচবিহার (১০৯)। এই জেলাগুলিতে একশোরও বেশি কোভিড পজিটিভের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে এ দিন কলকাতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় ১৪ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, নদিয়া এবং হাওড়ায় ২ জন করে আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। কোচবিহার, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং পুরুলিয়ায় ১ জন করে সংক্রমিত মারা গিয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)