গ্রাফিক: সন্দীপন রুইদাস।
রাজ্য জুড়ে বিধিনিষেধের জেরে আরও কমল নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি বছরের এপ্রিলের পর এই প্রথম তা সাড়ে ১১ হাজারে নামল। তবে কোভিডে রোগীদের মৃত্যুর দৈনিক সংখ্যা ফের বেড়ে দেড়শোর কাছে পৌঁছেছে। শুধুমাত্র কলকাতাতেই দৈনিক মৃত্যু ৪৪। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় মারা গিয়েছেন আরও ৩৬ জন। সেই সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে সংক্রমণের মোট হার। এখনও পর্যন্ত তা সর্বোচ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১.০১ শতাংশে। যদিও সংক্রমণের দৈনিক হার ৩৯ দিন পর কমে ২০ শতাংশের নীচে নেমেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৫১৪ জন। ২২ এপ্রিল স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৯৪৮ জন নতুন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তবে তার পর থেকে দৈনিক সংক্রমণ হু হু বাড়ছিল। যদিও অনেকের মতে, সংক্রমণ রুখতে রাজ্য জুড়ে বিধিনিষেধের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। যদিও উত্তর ২৪ পরগনা বা কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্য জেলায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। উত্তর ২৪ পরগনা বা কলকাতায় দৈনিক আক্রান্ত যথাক্রমে ২ হাজার ৪৪১ ও ১ হাজার ৭৩৫। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৮৯৫), হাওড়া (৮৪২), নদিয়া (৬৮২), হুগলি (৬০৪) এবং পশ্চিম মেদিনীপুর (৫৩৩) জেলায় দৈনিক আক্রান্ত ৫০০ বা তার বেশি হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের হলেন ১৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ৯৫৬ জন।
সংক্রমিতের সংখ্যা গত কয়েক দিন ধরে নিম্নমুখী হওয়ার জেরে দৈনিক সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১৯.২০ শতাংশে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ২০ এপ্রিল ওই হার ছিল ১৯.৬২ শতাংশ। তার পর থেকে এই প্রথম তা ২০ শতাংশের নীচে নামল।
দৈনিক সংক্রমণ আগের থেকে কমলেও ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে মৃত্যুর রোখা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা ছাড়াও নদিয়া ১৭, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮, হাওড়া এবং হুগলিতে ৭ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। জলপাইগুড়ি এবং বাঁকুড়াতে ৫ জন করে আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরে ৪, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমানে ২ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, কালিম্পং, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে আক্রান্ত কোভিডের বলি হয়েছেন। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার ২৬৮ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সংক্রমণে রাশ টানতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, টিকাকরণের সংখ্যা বাড়ানো এবং কোভিড টেস্টের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ২ লক্ষ ৬১ হাজার ১৭৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোভিড টেস্টের দৈনিক সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৩ হাজার ৫১৮টি।