গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
রাজ্যে করোনাভাইরাসে দৈনিক সংক্রমণের হার ফের নিম্নমুখী। এই নিয়ে টানা সাত দিন। একই সঙ্গে কমেছে এক দিনে মৃতের সংখ্যাও। সোমবার রাজ্য জুড়ে কোভিড টেস্ট কম হলেও দৈনিক সুস্থতার হার একই রয়েছে। তবে গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় কোভিডে মৃত্যুর পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি করছে। এ শহরে দৈনিক সুস্থতার হার বাড়লেও রবিবারের তুলনায় সোমবার কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
সোমবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের বা পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়েছে ৫.৭৯ শতাংশ। রবিবারের (৬.২৬ শতাংশ) থেকে তা নিম্নমুখী হলেও সোমবার রাজ্যে কোভিড টেস্ট কম হয়েছে। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততটাই স্বস্তিদায়ক বলে মনে করা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ হাজার ৬৭১টি কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোমবার রাজ্যে যে সংখ্যক কোভিড টেস্টে করানো হয়েছে, তার মধ্যে ১ হাজার ৮৩৪ টি রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। রবিবার এই সংখ্যা ছিল আড়াই হাজারেও বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৬২৯ জন। যদিও তার মধ্যে বেশির ভাগ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৪৫ জন আক্রান্ত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে সংক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২১ হাজার ৩৮৪।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের থেকে তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে সুস্থতার হারেও। সোমবার তা দাঁড়িয়েছে ৯৩.৯৪ শতাংশে।
আরও পড়ুন: কলকাতা-দিল্লি উড়ান প্রতিদিনই, করোনা আবহে মানতে হবে নিয়ম
আরও পড়ুন: ব্রিটেনে ফাইজারের প্রথম কোভিড টিকা নেওয়ার ঘটনা কি সাজানো? জেনে নিন আসল তথ্য
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সুস্থতার হার রাজ্য প্রশাসনকে স্বস্তি দিলেও কলকাতায় কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রবিবার করোনার জেরে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল এ শহরে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ১৬ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে এ শহরে মোট ২ হাজার ৭৯৮ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
কলকাতায় দৈনিক মৃতের সংখ্যায় বাড়লেও কমেছে আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার ৪০৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এই নিয়ে শহরে আক্রান্ত হলেন মোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৪৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদিও তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৮ হাজার ৬৯০ জন। ফলে এই মুহূর্তে শহরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ১৫৭।
কলকাতার মৃতের সংখ্যা বাড়লেও গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা রবিবারের তুলনায় কমেছে। রবিবার ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ জন সংক্রমিত মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্য়ে এখনও পর্যন্ত ৯ হাজার ১০০ জন কোভিড রোগীর মৃত্যুু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
গোটা রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলি। ওই দু’জেলায় মোট ৫ জন করে মারা গিয়েছেন। অন্য দিকে, জলপাইগুড়ি এবং হাওড়াতে ৪ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৩ জন করে সংক্রমিত মারা গিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। মালদহ, নদিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার গোটা রাজ্য়ে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ওই জেলায় মোট ৪০৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে উত্তর ২৪ পরগনায় এবং কলকাতা ছাড়াও উদ্বেগ বাড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৪২) এবং নদিয়া (১১২)। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দুই জেলাতেই একশোর বেশি নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)