গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সংক্রমণের হার কমলেও রাজ্যে ফের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়াল। যদিও দৈনিক সুস্থতার হার আগের তুলনায় ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। তবে রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমলেও কলকাতায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে রাজ্য জুড়ে দৈনিক কোভিড টেস্টের সংখ্যাও। গোটা রাজ্যের করোনা পরিসংখ্যানে আশঙ্কা জাগাচ্ছে কলকাতার পরিস্থিতি।
শুক্রবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই সংখ্যাটাই ছিল ৪৯। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৭ জনের সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তার পরেই রয়েছে কলকাতা। এ শহরে ১১ জন সংক্রমিত মারা গিয়েছেন। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনার পাশাপাশি দার্জিলিং, মুর্শিদাবাদ এবং হাওড়াতে ৩ জন করে কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। নদিয়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, দুুই দিনাজপুর, মালদহ এবং পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে সংক্রমণের জেরে মারা গিয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এ রাজ্যে মোট ৮ হাজার ৬২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গোটা রাজ্যে দৈনিক মৃতের সংখ্যা বাড়লেও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার। শুক্রবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩.৪২ শতাংশে। গত কাল তা ছিল ৯৩.৩৮ শতাংশ।
সুস্থতার হার বাড়লেও কলকাতায় সংক্রমণের পরিসংখ্যান ঘিরে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ শহরে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭৯৪ জন। গত কাল তা ছিল ৭৭৪। কলকাতার পাশাপাশি শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনায় ৬৯৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২১৬), হুগলি (১৮৫), হাওড়া (১৪০), জলপাইগুড়ি (১৪৪), দার্জিলিং (১৩৪) এবং নদিয়া (১৩৩)-র পরিসংখ্যানও যথেষ্ট অস্বস্তিদায়ক। এ সব জেলাতেই গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ বা তার বেশি সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে এই মুহূর্তে সংক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৪৫ জন। তবে এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদি তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৪৯ জন।
আরও পড়ুন: সামনের সারির ১ কোটি কোভিড যোদ্ধাকে আগে টিকা, জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য়মন্ত্রক
আরও পড়ুন: ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানি’! রাজভবনের গেটে দাঁড়িয়ে ববিকে তোপ শোভন-বৈশাখীর
সুস্থতার হার আগের তুলনায় ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পাশাপাশি কমেছে দৈনিক সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪৪ হাজার ৩৫১টি কোভিড টেস্ট হয়েছে। তার মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩ হাজার ২০৬টি। এর ফলে আগের দিনের তুলনায় দৈনিক সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ দাঁড়িয়েছে ৭.৩২ শতাংশে। বৃহস্পতিবার তা ছিল ৭.৩৬ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সংক্রমণের হারের পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২১৫-তে। বৃহস্পতিবার এক দিনে ৩ হাজার ৫৭ জন সংক্রমিত সেরে উঠেছিলেন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৪৯ জন কোভিড রোগী।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)