গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনায় দৈনিক আক্রান্তের তুলনায় ফের সুস্থ রোগীর সংখ্যা ফের বাড়ল এ রাজ্যে। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বেড়েছে সুস্থতার হারও। সেই সঙ্গে একদিনে সংক্রমিতের মৃত্যুও আগের থেকে কমেছে।
সোমবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন ২ হাজার ৭৩০ জন রোগী। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্য়ে করোনার থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ৭৬২ জন।
সুস্থ রোগীর তুলনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের হিসেব অনুযায়ী, একদিনে রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৭১। সব মিলিয়ে গোটা রাজ্যে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৮৪।
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ সফল টিকা, দাবি মডার্নার, আবেদন ছাড়পত্রের
আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট জোনে বন্ধ বাজার, নয়া নির্দেশিকা জারি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের
সংক্রমিতের সংখ্যাটা প্রায় ৫ লক্ষ হলেও তার মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ৭৬২ জন কোভিড রোগী পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। ফলে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ২৯৮।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আক্রান্তের তুলনায় একদিনে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ার জেরে সুস্থতার হারেও বৃদ্ধি হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সোমবার তা দাঁড়িয়েছে ৯৩.২৩ শতাংশে। রবিবার এই হার ছিল ৯৩.১৮ শতাংশ।
রবিবারের তুলনায় সুস্থতার হার সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পাশাপাশি করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা শুক্রবারের পর থেকে এই প্রথম ৫০-এর কোঠা থেকে নেমে ৪৮ হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ৮ হাজার ৪২৪ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সুস্থতার হারের মতোই স্বস্তি দিচ্ছে সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। সোমবার তা দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশে।
করোনার পরিসংখ্যানে গোটা রাজ্য়ের মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা। সংক্রমণে রাশ টানতে ইতিমধ্যেই কলকাতায় নতুন করে তিনটি কন্টেনমেন্ট জোনের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ১৭ নভেম্বরের পর এই প্রথম সোমবার শহরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আটশোর নীচে নেমেছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এ শহরে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩৬ জন। ১৭ নভেম্বর তা ছিল ৭৫২। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৪ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়া রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় করোনায় দৈনিক সংক্রমণ ১০০ বা তার বেশি ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৬৫), হাওড়া (১৪৫), নদিয়া (১৫৩) এবং পূর্ব বর্ধমান (১৩৮)-এর করোনা পরিসংখ্যান স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
সোমবার দৈনিক মৃত্যুর নিরিখে কলকাতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন কোভিড রোগীর। এ ছাড়া, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ায় ৩ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। মালদহ এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর এবং পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)