গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
সপ্তাহখানেক ধরেই এ রাজ্যে কোভিড রোগীদের দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই কমছিল। রবিবারও সেই প্রবণতা বজায় থাকল। পাশাপাশি, শতাংশের নিরিখে সামান্য হলেও দৈনিক সুস্থতার হারে উন্নতি হয়েছে। ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের দৈনিক হারও আগের দিনের থেকে তুলনামূলক ভাবে কমেছে। যদিও গোটা রাজ্যের করোনা-পরিসংখ্যানে আশঙ্কা জাগাচ্ছে কলকাতা। এ শহরে নতুন করে আক্রান্ত এবং দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে।
রবিবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৫ জন। শনিবার ২৬২ জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তবে এক দিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সব মিলিয়ে এ শহরে মোট ১ লক্ষ ২২ হাজার ২২৭ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদিও এই বিপুল সংখ্যক রোগীর অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭২ জন এই ভাইরাসের সংক্রমণ কাটিয়ে উঠেছেন বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। ফলে এই মুহূর্তে শহরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৬।
আরও পড়ুন: সোমবার ক্রিকেট মাঠে একই মঞ্চে থাকতে পারেন দাদা আর অমিত শাহ
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনে অমর্ত্যের ‘প্রতীচী’-র জমি বিতর্কে কলকাতায় গর্জে উঠলেন বঙ্গের বিদ্বজ্জনেরা
কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান। রবিবার কলকাতাতেই গোটা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে কলকাতার মোট ২ হাজার ৯২৯ জন সংক্রমিত মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
কলকাতার পরিসংখ্যানে উদ্বেগ বাড়ালেও একই কথা বলা যাবে না গোটা রাজ্যের ক্ষেত্রে। রবিবার রাজ্য জুড়ে আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ হাজার ১১৮টি কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। তার মধ্যে কোভিড পজিটিভের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৫। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। রবিবার ওই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৭৬ শতাংশে। শনিবার তা ছিল ৪.০৯ শতাংশ। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততই স্বস্তিদায়ক।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
দৈনিক সংক্রমণের হারের মতো পাশাপাশি উন্নতি হয়েছে সুস্থতার হারে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানের নিরিখে তা দাঁড়িয়েছে ৯৫.৭৩ শতাংশে। শনিবার তা ছিল ৯৫.৬৬ শতাংশ।
গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৭৪। বুলেটিন অনুযায়ী, আক্রান্তের মধ্যে ৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৭১ জন পুরোপুরি সুস্থ। পাশাপাশি, রবিবার রাজ্যে মোট ১ হাজার ৭৪০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
সুস্থতার হারের মতো স্বস্তি দিচ্ছে গোটা রাজ্যের দৈনিক মৃতের সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে অক্টোবরে তা সর্বোচ্চ ৬৪ হয়েছিল। তার পর থেকে দৈনিক মৃত্যুর ক্রমশই নিম্নমুখী হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে রাজ্যে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৯ হাজার ৫৯৮ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
রবিবার কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যার মতোই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৮ জন। যা রাজ্যের মধ্যে দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে সবচেয়ে বেশি। অন্য দিকে, কলকাতার পরই দৈনিক মৃতের নিরিখে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় ৭ জন মারা গিয়েছেন। এ ছাড়া, পশ্চিম বর্ধমানে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩ জন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, হাওড়ায় ২ এবং পুরুলিয়া ১ জন সংক্রমিত মারা গিয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)