গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছিল রাজ্যে। বুধবার তা ছাড়াল ১৪ হাজার। হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ বাড়ল রাজ্যে। কলকাকাতেও মঙ্গলবার দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে চার হাজারের একটু বেশি ছিল। বুধবার তা পেরোল ছ’হাজার। উত্তর ২৪ পরগনাতেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আড়াই হাজারের গণ্ডি। পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। দার্জিলিঙেও ২০০-র কাছে পৌঁছে গেল দৈনিক আক্রান্ত। সংক্রমণের হারও এক লাফে ২৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেল রাজ্যে। বেড়েছে দৈনিক মৃত্যু। বড় লাফ দেখা গেল সক্রিয় রোগীর সংখ্যাতেও।
ঠিক ছ’মাস পর গত সপ্তাহে বুধবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের গণ্ডি পার করেছিল রাজ্যে। এই সপ্তাহে বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করে, তা অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ হাজার ২২ জন। কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ১৭০ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৪০ জন। এর আগে পর্যন্ত কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলির দৈনিক সংক্রমণই শুধু উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। এখন দেখা যাচ্ছে, প্রায় সব জেলাতেই বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা।
হাওড়ায় নতুন সংক্রমণ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে বুধবার। ওই জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮০ জন। হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্ত এক লাফে অনেকটা বেড়ে হল যথাক্রমে ৬৭০ ও ৭৬৩। পশ্চিম বর্ধমানে ৫০০-র গণ্ডি ছাড়াল নতুন সংক্রমণ। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫৬ জন। মঙ্গলবারই পূর্ব বর্ধমানে ১০০ ছাড়িয়েছিল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এ দিন তা ছুঁল ২৩৩। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমেও নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হল যথাক্রমে ২৪৯, ১৮৭ এবং ৩৯২। দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও বুধবার ১০০-র গণ্ডি ছাড়াল দৈনিক সংক্রমণ।
দক্ষিণবঙ্গেও জেলাগুলিতেও লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। দার্জিলিঙে নতুন করে আক্রান্ত ১৯৩ জন। মালদহে নতুন সংক্রমণ ১২৫। বেড়েছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং দুই দিনাজপুরে।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এর মধ্যে কলকাতায় এবং উত্তর ২৪ পরগনায় প্রাণ গিয়েছে পাঁচ জন করে করোনা রোগীর। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডে মারা গিয়েছেন ১৯ হাজার ৮২৭ জন। বুধবার সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৮ জন।
গত সোমবার ২০ শতাংশের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার। মঙ্গলবার সংক্রমণের হার সামান্য কমলেও বুধবার এক লাফে তা হল ২৩.১৭ শতাংশ। ভয় ধরাচ্ছে কলকাতা ও হাওড়ার পরিস্থিতি। মাত্র সাত দিনে কলকাতা শহরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার পৌঁছে গেল ৪৪.৫ শতাংশে। পাশের জেলার হাওড়াতেও দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেখানে সংক্রমণের হার গত এক সপ্তাহে ৩০.১৪ পৌঁছেছে শতাংশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া ২৯ ডিসেম্বর-৪ জানুয়ারির সংক্রমণ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
প্রায় আট হাজার বেড়ে রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা হল ৩৩ হাজার ৪২। কলকাতায় সক্রিয় রোগী ছাড়িয়ে গেল সাড়ে ১৫ হাজার। কোচবিহার আর কালিম্পং বাদে রাজ্যে আর সব জেলাতেই সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে টিকা পেয়েছেন ৮ লক্ষ ৮২ হাজার ৩৮৩ জন। রাজ্যে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১০ কোটি ৬৭ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৮৪।