গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মঙ্গলবার একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল। বুধবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত আরও বেড়ে টপকে গেল দু’হাজারের গণ্ডি। কলকাতাতেও দৈনিক আক্রান্ত বাড়তে বাড়তে আটশো ছাড়িয়েছে। সাড়ে পাঁচশোর গণ্ডি পার করেছে উত্তর ২৪ পরগনায়। চিকিৎসক মহলের আশঙ্কা ছিল, চলতি বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছিল, একই ভাবে এ বারও ওঠা-নামার মধ্যে দিয়েই সংক্রমণ বাড়তে পারে রাজ্যে। বুধবার দৈনিক সংক্রমণের দু’হাজার পার করাও সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পর দৈনিক আক্রান্ত কমলেও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, দৈনিক সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখীই। বাড়তে বাড়তে তা ১৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সে দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে অক্ষরে অক্ষরে কোভিডবিধি পালনের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। এরই পাশাপাশি, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৫২ জন। পাঁচ মাস পর রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত আবার দু’হাজারের উপরে উঠল। এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৪২ জন। রাজ্যে নতুন করে যত সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই কলকাতার অধিবাসী। মহানগরীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২৫ জন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনাও। ওই জেলায় আক্রান্ত ৫৫২ জন। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ওই তিন জেলার কোভিড পরিস্থিতিও প্রশাসনের নজরে রয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া ও বীরভূমেও।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ২৩১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪৮৪ জনের। দৈনিক সংক্রমণের হার কমে হল ১৬.২৪ শতাংশ। রাজ্যে বর্তমানে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে ১৪ হাজার ২৭০।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১৬০। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৩৫। তার আগের দু’দিন ছিল ১২৩ এবং ১৪৮। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ১৯৪ এবং ২২৯। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১৬০, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)