হাসনাবাদে মেয়েদের ফুটবল। নিজস্ব চিত্র
করোনায় কাঁপছে বাংলা। তার মধ্যে ফুটবল!
রাস্তাঘাটে মাস্কহীন লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। অথচ, ‘ফস্কা গেরো’য় রবিবার ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলির দুই মাঠে। যে দুই জেলায় সংক্রমণ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, সেখানে দর্শকভরা মাঠে এই প্রতিযোগিতা হয় কী ভাবে, উঠছে প্রশ্ন।
এ দিন বিকেলে হাসনাবাদ থানার বায়লানিতে একটি ক্লাবের উদ্যোগে বসেছিল মেয়েদের ফুটবলের আসর। বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলোয়াড়রা এসেছিলেন। খেলা দেখতে উপচে পড়া ভিড়ে মাস্ক দেখা যায়নি অধিকাংশের মুখেই। মানা হয়নি দূরত্ব-বিধিও। উদ্যোক্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, সবাইকে মাস্ক ব্যাবহার করতে ও দূরত্ববিধি মানতে বার বার বলা হয়েছিল।
হাসনাবাদ থানা জানিয়েছে, ওই খেলার অনুমতি ছিল না। তা হলে কেন তা বাতিল হল না, এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
হুগলিতে দৈনিক সংক্রমণ ছ’শো ছাড়িয়ে গিয়েছে। উদ্বেগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বৈদ্যবাটীতে কৃষ্টিচক্র ক্লাব আয়োজিত অনূর্ধ্ব ১৫ আমন্ত্রণমূলক নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতা হয় কী করে, এ প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন ছিল ফাইনাল।। খেলা দেখতে ছোটদের পাশাপাশি সাইডলাইনের ধারে ভিড় জমিয়েছিলেন বড়রাও। আটটি দলকে নিয়ে ক্লাবের মাঠেই ওই প্রতিযোগিতা শুরু হয় ১৭ এপ্রিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি ম্যাচেই প্রচুর দর্শক এসেছিলেন। তাঁরা গা-ঘেঁষাঘেষি করে খেলা দেখেন। অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না। তা সত্ত্বেও আয়োজকদের হেলদোল ছিল না। রবিবার বিকেলে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, দু’শোর বেশি দর্শক। অতিথি হিসেব মাঠে ছিলেন ভারতের জুনিয়র বিশ্বকাপ ফুটবল খেলোয়াড় অভিজিৎ সরকার, বৈদ্যবাটীর বিদায়ী পুরপ্রধান তথা বিধানসভায় চাঁপদানির তৃণমূল প্রার্থী অরিন্দম গুঁইন।
স্থানীয় এক প্রৌঢ়ের প্রশ্ন, ‘‘চতুর্দিকে ত্রাহি রব। আর এখানে একমাঠ ভিড় নিয়ে ফুটবল হল! আশ্চর্য! প্রশাসন কি এ সব জানতেই পারে না?’’ ফাইনালের দুই রেফারি নির্মল সরকার ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘খেলা চালানো ঠিক হয়নি। আমরা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম।’’ তাঁরা কেন খেলালেন? জবাব মেলেনি।
উদ্যোক্তা ক্লাবের ফুটবল সম্পাদক বিপ্লব চৌধুরীর সাফাই, ‘‘নতুন প্রজন্মের ছেলেদের মাঠমুখী করতে ও উৎসাহ দিতে এবং নতুন প্রতিভা অন্বেষণের উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন। প্রতিযোগিতা বন্ধের উপায় বা সময় ছিল না। দর্শকদের করোনা বিধি মানার অনুরোধ করা হয়েছে।’’ অরিন্দমবাবুরও একই বক্তব্য। এ ক্ষেত্রেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।