গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে করোনায় মৃতের মোট সংখ্যা পাঁচ হাজার পেরিয়ে গেল। সেই সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে এই নিয়ে টানা দু’দিন কলকাতাকে ছাপিয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনা। পাশাপাশি, আক্রান্তের মোট সংখ্যাও পার করল ২ লক্ষ ৬০ হাজারের গণ্ডি। তবে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট-এ আগের দিনের তুলনায় বিশেষ হেরফের ঘটেনি। যদিও খানিকটা হলেও ঊর্ধ্বমুখী দৈনিক সুস্থতার হার।
বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ১৭ জনের। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টাতেই মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। বুধবারের তুলনায় মৃতের সংখ্যা একই থাকলেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলা উত্তর ২৪ পরগনা। গতকালের মতো এ দিনও ওই জেলায় এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল উত্তর ২৪ পরগনায় ১৮ জন মারা গিয়েছিলেন। এ দিন সেই সংখ্যা কমলেও গোটা রাজ্যের মধ্যে এক দিনে সবচেয়ে বেশি ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ওই জেলায়।
করোনায় দৈনিক মৃতের সংখ্যার নিরিখে কলকাতা অবশ্য রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পরেই। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এ দিন শহরে মারা গিয়েছেন ১১ জন। এ ছাড়া, হাওড়ায় ৭ জন, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫ জন করে, আলিপুরদুয়ার, হুগলি ও পশ্চিম বর্ধমানে ২ জন করে এবং জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
করোনায় মৃতের সংখ্যার মতোই উদ্বেগ বাড়িয়েছে গোটা রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা। এই প্রথম তা ২ লক্ষ ৬০ হাজারের কোঠা পার করল। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে মোট ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৩২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আশার কথা, এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৭৫৫ জন রোগী। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় কোভিড-রোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৫২।
আরও পড়ুন: হাথরসের পর ভাদোহী, ফের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ যোগী-রাজ্যে
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে ফের চিকিৎসকের মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যাটাও খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। ওই সময়ের মধ্যে তা আগের দিনের থেকে কমে হয়েছে ৩ হাজার ২৭৫। গতকাল তা ছিল ৩ হাজার ২ ৮১।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
দৈনিক আক্রান্তের পাশাপাশি এ দিন স্বস্তি দিয়েছে সুস্থতার হারও। গত ২৭ অগস্ট থেকেই দৈনিক সুস্থতার হার থেকেছে ৮০ শতাংশের উপরে এবং ক্রমশই তা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এ দিনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এ দিন সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৮৭.৮৭ শতাংশ। এই হার যত ঊর্ধ্বমুখী হবে, ততই স্বস্তিদায়ক।
সুস্থতার হারে বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। এ দিনের বুলেটিন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তা দাঁড়িয়েছে ৭.৪৭ শতাংশে। প্রতি দিন যত জনের কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। সুস্থতার হার বাড়ার পাশাপাশি সংক্রমণের হার কমলে, তবেই তা আশাপ্রদ বলে মনে করা হয়।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সুস্থতা এবং সংক্রমণের হারে স্বস্তি মিললেও রাজ্যে করোনার গতি থামার লক্ষণ নেই। গত কয়েক দিন উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকলেও এ দিন শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে মোট ৬৬৯ জনের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪৬। পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৩১), হাওড়া (১৯৫), হুগলি (১৪৫), পশ্চিম মেদিনীপুর (১১৮), পূর্ব মেদিনীপুর (১৪০) জেলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০-র উপর।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)