গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লক্ষের গণ্ডি পার করল। তবে ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে সুস্থতার হারও। এই জোড়া পরিসংখ্যানের পাশাপাশি স্বস্তিদায়ক ভাবে কমেছে এক দিনে মৃতের সংখ্যা। যদিও পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার সামান্য হলেও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় রাজ্যের করোনা-চিত্র যে পুরোপুরি স্বস্তি জুগিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে, তা বলা যাবে না।
সোমবার রাতে প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৫৮০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এর মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৮৪৪ জন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় কোভিড-রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৮৯৯। পাশাপাশি, এক দিনে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯২৩ জন রোগী।
সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমায় বেড়েছে সুস্থতার হারও। ২৭ অগস্ট থেকেই দৈনিক সুস্থতার হার থেকেছে ৮০ শতাংশের উপরে। এবং ক্রমশই তা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এ দিনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, শনিবারের ৮৭.৬৭ শতাংশ থেকে এ দিন তা বেড়ে হয়েছে ৮৭.৭৩ শতাংশ। এই হার যত ঊর্ধ্বমুখী হবে, ততই স্বস্তিদায়ক।
আরও পড়ুন: ছত্রধরের করোনা, গৃহবন্দি রেখে ফের কোভিড পরীক্ষার আবেদন এনআইএ-র
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সুস্থতার হার বৃদ্ধি স্বস্তি জোগালেও বিপরীত চিত্র দেখা গিয়েছে দৈনিক সংক্রমণের হারে। গত কালের ৭.৩০ শতাংশের তুলনায় এ দিন তা দাঁড়িয়েছে ৭.৬৪ শতাংশে। প্রতি দিন যত জনের কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততই সন্তোষজনক।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
পরিসংখ্যানের নিরিখে সংক্রমণের হার চিন্তা বাড়ালেও গত কালের তুলনায় এ দিন কম সংখ্যক কোভিড-রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬ জন রোগী মারা গিয়েছেন। গত কাল ওই সংখ্যাটাই ছিল ৬০। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে মোট ৪ হাজার ৮৩৭ জন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বার থেকে রবিবারেও চলবে কলকাতা মেট্রো
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
রাজ্যের করোনা-আক্রান্তের তালিকায় গোড়া থেকেই শীর্ষে থেকেছে কলকাতা। তবে সম্প্রতি সে ধারায় বদল ঘটেছে। মাঝে মাঝেই কলকাতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এ দিনও ওই জেলা টপকে গিয়েছে এ শহরকে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনায় এক দিনে ৬৫৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে। তার পরেই রয়েছে কলকাতা। এ শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬১৮ জন। আক্রান্তের নিরিখে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়া উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৩৪), পশ্চিম মেদিনীপুর (১২৩), পূর্ব মেদিনীপুর (১২৪), হাওড়া (১৮৫), হুগলি (১১৬) এবং নদিয়া (১২৭) জেলায়। এই সব জেলাতেই দৈনিক একশোরও বেশির কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সংক্রমণের তালিকায় দুই নম্বরে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে এ রাজ্যে শীর্ষ রয়েছে কলকাতা। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এ শহরে এক দিনে মারা গিয়েছেন ১৫ জন কোভিড-রোগী। এর পরেই রয়েছে হাওড়া জেলা। হাওড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ৮, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬, হুগলিতে ৪, আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন করে এবং কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে আক্রান্ত মারা গিয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)