ছবি: পিটিআই।
করোনার সঙ্কট মোকাবিলায় এ বার ‘পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট’ (পিপিই) তথা ‘বর্মবস্ত্র’ তৈরি করল চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)। শুক্রবার প্রায় ১৫০টি ‘পিপিই’ তৈরি করা হয়েছে বলে কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, দৈনিক প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি ‘পিপিই’ তাঁরা তৈরি করতে পারবেন। তবে এই ‘পিপিই’ তাঁরা নিজেদের হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যবহার করবেন বলে জানিয়েছেন।
করোনার মোকাবিলায় আগেই চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার তত্ত্বাবধানে থাকা কস্তুরবা গাঁধী হাসপাতালে ‘আইসোলেশন’ ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। এই ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য শয্যা ও টেবিল বানিয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সমস্ত রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এত দিন ‘নর্দান’ রেল থেকে ‘পিপিই’ আনা হচ্ছিল। সম্প্রতি কারখানা কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, তাঁরা নিজেরাই ‘পিপিই’ তৈরি করবেন।
রেল সূত্রে খবর, সপ্তাহ দু’য়েক আগে উত্তর রেলের হরিয়ানা সংলগ্ন জগধারি ওয়ার্কশপে বর্মবস্ত্রের একটি ‘প্রোটোটাইপ’ তৈরি করা হয়। তা ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের (ডিআরডিও) কাছ থেকে ছাড়পত্র পায়। সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে যাবতীয় শর্ত পূরণ করায় ওই ‘প্রোটোটাইপ’কে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর।
ওই পদ্ধতি অনুসরণ করেই রেলের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে বর্মবস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। সিএলডব্লিউতেও একই ভাবে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘নর্দান রেল কর্তৃপক্ষ যে এজেন্সি থেকে এই ‘পিপিই’ তৈরির কাপড় কিনছে, তাদের কাছ থেকে আমরাও কাপড় কিনে ‘পিপিই’ তৈরি করতে ব্যবস্থা নিয়েছি।’’
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে এখন কারখানায় কোনও উৎপাদন প্রক্রিয়া চলছে না। তা হলে, কোথায় তৈরি হচ্ছে ‘পিপিই’? মন্তার সিংহ জানিয়েছেন, রূপনারায়ণপুরে একটি অত্যাধুনিক জামা-কাপড় তৈরির কারখানা আছে। সেখানেই কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে গুণমান বজায় রেখে ‘পিপিই’ তৈরির কাজ চলছে।
কী ভাবে তৈরি হচ্ছে ওই বর্মবস্ত্র?
সিএলডব্লিউ সূত্রে খবর, ওই বস্ত্র নির্মাণস্থলটিকে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। যে সব কর্মীরা সেখানে কাজ করছেন তাঁদেরও পুরোপুরি ‘স্যানিটাইজ়’ করার পরে, যেতে দেওয়া হচ্ছে। আমদানি করা বিশেষ উপকরণ দিয়ে ওই বস্ত্র সেলাই করা হচ্ছে। পরে সেলাইয়ের সবকটি জোড়কে বিশেষ ধরনের টেপ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে কোথাও কোনও ফাঁক না থাকে। পা থেকে মাথা ও মুখ পর্যন্ত ঢাকার উপযোগী করে টানা ওই বর্মবস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। তবে যে ভাবে ওই বস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে তা কেবল এক বার ব্যবহার করার উপযোগী।
সিএলডব্লিউ-এর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ বলেন, ‘‘বর্মবস্ত্র তৈরির উপকরণ সহজলভ্য হলে আমরা অনেকটাই উৎপাদন বাড়াতে পারব।’’