বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড । ফাইল চিত্র।
ক্লোরোকুইন, অ্যাজ়িথ্রোমাইসিন বা প্যারাসিটামলের মতো বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করলেও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কখনও তৈরি করেনি আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম ওষুধ সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (বিসিপিএল)। এ বার সেটিও তৈরির জন্য রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছ থেকে শুক্রবার ছাড়পত্র পেল সংস্থাটি। ওষুধটির মূল রাসায়নিক কাঁচামাল (এপিআই) হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট পেলেই সেটি তাঁরা তৈরি করতে পারবেন বলে দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ক্ষেত্র বিশেষে করোনা রোগীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নির্দিষ্ট প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদেরও তা খেতে বলা হয়েছে। আমেরিকা-সহ কয়েকটি দেশে ওষুধটি রফতানি করবে ভারত।
এই পরিস্থিতিতে বিসিপিএলে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিংহকে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিসিপিএল সূত্রের খবর, তারাও তা খতিয়ে দেখছিল। সিটুর তরফে তপন সেন বিসিপিএল-কে ওই এপিআই জোগানের জন্য কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন।
মুখ্য সচিব এ দিন বলেন, ‘‘বিসিপিএল কী করে বা কী করত তার ইতিহাস আমার জানা নেই। তারা যদি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করতে চায়, কেন্দ্র ও রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে আবেদন করে ছাড়পত্র পেলে করবে।’’
বিসিপিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি এম চন্দ্রাইয়া জানান, এ ধরনের ওষুধ তৈরির ছাড়পত্রের জন্য রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে আবেদন করতে হয়। তাঁরা আবেদন করে এ দিনই ছাড়পত্র পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের এপিআই ভারতেই তৈরি হলেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জোগান নিয়ে সংশয় দানা বেধেছে। তা দ্রুত জোগানের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাব। এপিআই পরীক্ষার দু’দিনের মধ্যে মানিকতলার কারখানায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্যাবলেট তৈরি শুরু করা সম্ভব। সেখানে দৈনিক ১০ লক্ষ পর্যন্ত ওই ওষুধ তৈরি হতে পারে। প্রয়োজনে শিফট বাড়িয়ে উৎপাদন কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে।’’
কোভিড সংক্রান্ত রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী এ দিন বলেন, ‘‘কোভিডের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে কিছু আন্তর্জাতিক রাজনতিক ব্যক্তিত্ব যা আচরণ করছেন, তা ভুলে যান। এ নিয়ে আলোচনা বন্ধ করুন। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ৩৩ জন রোগীর একজনকেও তা দিতে হয়নি। রাজ্যের যতটুকু হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দরকার, তা মজুত রয়েছে। অযথা জলঘোলা না করাই ভাল।’’
চন্দ্রাইয়া জানান, স্যানিটাইজ়ার তৈরির ছাড়পত্রও তাঁরা পেয়েছেন। তবে এখনই তা করার মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)