প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে বেসরকারি হাসপাতালগুলির কাছে সিসিইউ-আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধির আর্জি জানাল স্বাস্থ্য কমিশন। প্রয়োজনে পরিকাঠামো নির্মাণে সরকারি সাহায্য মেলারও ইঙ্গিত দিলেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, সম্প্রতি স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের আশ্বাস পাওয়ার পরে এ নিয়ে তাঁরাও সক্রিয় হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া।
পুজোর পরে এখনও পর্যন্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে প্রতিদিনের আক্রান্তের সংখ্যায় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়নি। কালীপুজো, দীপাবলি পালনেও সাধারণ মানুষ যাতে সচেতনতার পরিচয় দেন, সে জন্য ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু এরপরও করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটলে সাধারণ শয্যার চেয়েও সিসিইউ-আইসিইউ বেডের জোগানই স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
বিশেষত আগামী বুধবার থেকে যেখানে লোকাল ট্রেন পরিষেবাও চালু হয়ে যাচ্ছে। এই আবহে বেসরকারি হাসপাতালগুলির উদ্দেশে সিসিইউ-আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে এদিন একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান।
আরও পডুন: শাহের ‘দাওয়াই’তে বুথমুখী বিজেপি
আরও পডুন: এনামুলের অন্তর্বর্তী জামিন, জেরায় হাজিরার নির্দেশ
বেসরকারি হাসপাতাল তো বটেই সরকারি হাসপাতালেও সিসিইউ-আইসিইউ বেডের জন্য অপেক্ষামান রোগীর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের একাংশের বক্তব্য, এখন নতুন করে আর ক্রিটিক্যাল কেয়ার শয্যা বাড়ানোর জায়গা নেই বললে চলে। তা ছাড়া কোভিড বেড বাড়াতে গিয়ে নন-কোভিড রোগীদের পরিষেবা যাতে ব্যাহত না-হয় সেটিও নিশ্চিত করার বিষয় রয়েছে।
হোম আইসোলেশনে করণীয়
হোম আইসোলেশনে কত দিন:
• উপসর্গ শুরু হওয়ার পরে ১৭ দিন (যেখানে কমপক্ষে ১০ দিন জ্বর নেই)
• আক্রান্ত উপসর্গহীন হলে কোভিড পরীক্ষার দিন থেকে ১৭ দিন
• হোম আইসোলেশন শেষে আর নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। বিশ্রাম নিয়ে চিকিৎসক যা বলবেন
বাড়িতে থাকার মাপকাঠি:
• অল্প কষ্ট বা সে ভাবে শ্বাসকষ্ট নেই। আক্রান্তের জন্য পৃথক ঘর,শৌচাগার। রোগীর দেখাশোনার জন্য বাড়ির কাউকে থাকতে হবে। আক্রান্তকে বাধ্যতামূলক ভাবে এক জন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। হাসপাতাল বা সেফ হোমে ভর্তি নিয়ে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
কখন বাড়িতে থাকা যাবে না:
• আক্রান্তের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। ঝুঁকিপূর্ণ অন্য অসুখও রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে ফুসফুস বা শ্বাসকষ্টের রোগ যেমন। লিভার, কিডনি ভোগাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি, হৃদরোগ, ব্রেন স্ট্রোক বা এইচআইভি, আক্রান্ত, ক্যানসার রোগী বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার জন্য ওষুধ খেতে হয়
রোগীর করণীয়:
• সব সময় মাস্কের ব্যবহার। সম্পূর্ণ বিশ্রাম। থার্মোমিটারে তাপমাত্রা দেখার পাশাপাশি পালস অক্সিমিটারের সাহায্যে দেহে অক্সিজেনের মাত্রায় সতর্ক নজর থাকা আবশ্যক। চার দিন অন্তর রক্তের ন্যূনতম পরীক্ষা
পরিজন শুনুন:
• সর্বক্ষণ মাস্ক। কোভিডের উপসর্গ দেখা দিলে আপনাকেও পরীক্ষা করাতে হবে। পরিবারের কোনও সদস্যের ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থাকলে বা রোগীর খুব কাছাকাছি থাকলে (রোগীর সঙ্গে কাছাকাছি থাকার শেষ দিন থেকে) ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে উপসর্গ না থাকলেও কোভিড পরীক্ষা
হাসপাতালে ভর্তি কখন:
• শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম। শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বুকে ব্যথা বা চাপ। রোগী ঝিমিয়ে বা ভুল বকছেন। খিঁচুনি বা কথাবার্তা জড়িয়ে যাচ্ছে। মুখ, ঠোঁট নীলচে। উপসর্গ বা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তির কথা বললে তা মানতে হবে
তথ্যসূত্র: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা
এ দিনের অডিও বার্তায় কমিশনের চেয়ারম্যানকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘যদি আপনারা বুঝছেন বেড বাড়ানোর আর জায়গা নেই। তাহলে কিছু সাধারণ শয্যাকে আইসিইউ-সিসিইউ শয্যায় রূপান্তরিত করার আর্জি জানাচ্ছি।’’ এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: ‘টিকার মতোই শুধু আইন বাঁচায় না, তার প্রয়োগ বাঁচায়’
এ দিন কুণালবাবু জানান, শহরে মূলত ১২টি হাসপাতালে সিসিইউ পরিষেবার যথাযথ পরিকাঠামো রয়েছে। আচমকা দুশো সিসিইউ-আইসিইউ বেড বাড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হলে একটি নীল-নক্সা তৈরি রাখা আবশ্যক। সেদিক থেকে কমিশনের প্রস্তাব স্বাগত। তবে ভেন্টিলেটর-সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির জোগানের পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্সও প্রয়োজন। পিয়ারলেসের সিইও সুদীপ্ত মিত্রের কথায়, ‘‘সাধারণ শয্যাকে রাতারাতি আইসিইউ বেডে পরিণত করা সম্ভব নয়। শয্যা বাড়ালেও সেই অনুপাতে চিকিৎসক-নার্স কোথায় পাব?’’ রূপকবাবু জানান, স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে কথার ভিত্তিতে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে আইসিইউ বেড তৈরির জন্য কাদের কী ধরনের প্রয়োজন রয়েছে তা জানতে চাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ছাড়াল, বাড়ছে সুস্থতার হারও