—ফাইল চিত্র।
চার ঘণ্টার মধ্যে করোনা আক্রান্ত চার রোগীর মৃত্যুতে প্রশ্নের মুখে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মঙ্গলবার সকাল সাতটা থেকে এগারোটার মধ্যে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে মৃত্যু হয় ওই চার রোগীর। অভিযোগ উঠেছে, অক্সিজেনের অভাবেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘ওই চার জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হয়েছিলেন ও প্রত্যেকেরই কো-মর্বিডিটি ছিল। অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যুর খবর ঠিক নয়। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি।’’
তবে হাসপাতালে যে অক্সিজেনের সিলিন্ডার জোগানের অভাব আছে, তা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন। অক্সিজেনের জোগান যাতে পর্যাপ্ত পাওয়া যায় সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিল্পের কাজে অক্সিজেন প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ দিন যে চার জন রোগীর মৃত্যু হয় সকলেরই বয়স ৫৭ থেকে ৬০-এর মধ্যে। কর্তৃপক্ষ জানান, কেউ স্ট্রোক, কেউ হাই ব্লাড প্রেসারের রোগী ছিলেন। ডেপুটি সুপারের দাবি, ‘‘কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ৯০ জন রোগীকেই প্রয়োজন মতো অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, রামপুরহাট মেডিক্যালে যে সংস্থা অক্সিজেন সরবরাহ করে, তারা প্রয়োজন মতো অক্সিজেন দিতে পারছে না। হাসপাতালে ১২০ শয্যার কোভিড ইউনিট চালু করার আগে দৈনিক ১৪৪টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার দরকার পড়ত। কোভিড ওয়ার্ড চালু হওয়ার পরে তা হয়েছে ১৭৪। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার রাত থেকেই অক্সিজেনের অভাব দেখা গিয়েছে। রাতে ৩০টি বড় সিলিন্ডার রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলা থেকে জোগান দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের নার্সিংহোম থেকে ৪টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে ১০২টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার সরকারি ভাবে জোগান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রামপুরহাটের একটি বেসরকারি সংস্থা ৩০টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগান দিয়েছে। দু’টি বেসরকারি সংস্থাও ৫০ ও ৯০টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগান দেওয়ার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আশ্বাস দিয়েছে।
হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওয়ার্ডের বাইরেই রোগীর আত্মীয়েরা দাঁড়িয়ে থাকছেন। আইসোলোশনে ওয়ার্ডে দরজা খোলা রাখার অভিযোগও উঠেছে। ফলে, পরিজন সংক্রমিত হয়ে তা ছড়াতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওয়ার্ডে নিরাপত্তা কর্মী বাড়ানো হচ্ছে।