ছবি এএফপি।
সংক্রমণের উৎস খোঁজার ভরকেন্দ্রে কোভিড হানা কী ভাবে! স্বাস্থ্য ভবনে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যে মঙ্গলবার এই প্রশ্নই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল।
স্বাস্থ্য দফতরের করোনা বুলেটিনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫০। করোনা পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যায় আবার রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। কলকাতায় এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা (২৯১) তিনশোর ঘর ছুঁয়ে ফেলল বলে। কিন্তু সে সবের থেকেও স্বাস্থ্য দফতরের সদর কার্যালয়ে কার্যত প্রতিটি বিল্ডিংয়ে ভাইরাস কী ভাবে বাসা বাঁধল, সেটাই চর্চার বড় বিষয় হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, শুক্রবার কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলের এক মহিলা চিকিৎসকের করোনা পজ়িটিভ ধরার পরে বাকিরা নমুনা পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। তবে চিকিৎসকের থেকে যাঁরা নিরাপদ দূরত্বে কাজ করতেন, তাঁদেরও কারও কারও উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ফলে এক জন নাকি দু’জনের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত নয়।
পরিবহণ ভবনেও চার তলায় হিসেব রক্ষণ বিভাগের এক কর্মীর এবং পরিবহণ নিগমে তারাতলা ডিপোয় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সল্টলেকের যুব আবাসে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কয়েক জন কর্মীকে রাখা হয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগে সেখানে থাকা এক বাসকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
আরও পড়ুন: নতুন করে ঘরে বন্দি বর্ধিত কন্টেনমেন্ট জ়োনে, কাল বিকেল ৫টা থেকে
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এক বার্তায় সরকারি দফতরে পারস্পরিক দূরত্ববিধি এবং কর্মীদের মাস্ক পরে থাকা বাধ্যতামূলক করতে বলেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কার্যালয়গুলিতে যথাসম্ভব কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সচিবদের ব্লক, স্টেট এড্স কন্ট্রোল সোসাইটি, কুষ্ঠ রোগের বিভাগ, স্বাস্থ্যসাথী-সহ কার্যত স্বাস্থ্য ভবনের সব বাড়িতেই আক্রান্তের খবর মিলেছে। ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলে’র যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার আধিকারিক-সহ ১১ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে বলে সোমবারই জানা গিয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে সোমবার র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে প্রায় ১২ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে খবর। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে সচিবদের ব্লক, ভলান্টিয়ার কন্ট্রোল সেলে কর্মরত কর্মীরাও রয়েছেন। এ দিন স্বাস্থ্য ভবনের মূল বিল্ডিংয়ে আর ওই পরীক্ষা হয়নি। তবে স্বাস্থ্যসাথী বিল্ডিংয়ে অবস্থিত মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনে ৫৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই বিল্ডিংয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের চার জন কর্মী আক্রান্ত। কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলেরও আরও কয়েক জন সদস্যের উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে খবর। বাদ পড়েনি ডিএমই সেকশনও। সেই বিভাগে কর্মরত মাইক্রোবায়োলজির এক চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: শহরে কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা ১৭ থেকে বেড়ে ২৮
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এনআরএসের পাঁচজন রোগী এবং এক জন জুনিয়র চিকিৎসক নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দু’জন জুনিয়র চিকিৎসক ছাড়া বি সি রায় শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর।