প্রতীকী ছবি।
ফিরেছিলেন সৌদি আরব থেকে। সেই যুবকের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে কি না, তা যাচাই করতে গিয়ে সোয়াইন ফ্লু-র হদিস পেলেন চিকিৎসকেরা। তবে মিনারুল শেখ নামে ওই যুবক আপাতত সুস্থই আছেন বলে জানিয়েছেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।
এক দিনের ব্যবধানে সৌদি আরব থেকে এমিরেটসের উড়ানে কলকাতায় ফেরেন জিনারুল শেখ ও মিনারুল শেখ। শনিবার রাতে নবগ্রামের বাড়িতে ফিরে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে জিনারুল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরের দিন বিকেলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। সোমবার স্বাস্থ্য দফতর জানায়, মৃতের লালারসের নমুনায় করোনার প্রমাণ মেলেনি। রবিবার কলকাতায় ফেরা মিনারুলের দেহেও করোনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু সোয়াইন ফ্লু-র অস্তিত্ব মিলেছে। আইডি-র অধ্যক্ষা অণিমা হালদার জানান, মিনারুল ছাড়া আরও এক জন এইচওয়ানএনওয়ানে (সোয়াইন ফ্লু-র ভাইরাস) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অধ্যক্ষা জানান, এ দিন নতুন করে আরও চার জনকে আইডি-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জন কর্মসূত্রে ইটালি গিয়েছিলেন এবং এক জন কলকাতা বিমানবন্দরে রিসেপশনিস্টের কাজ করেন। করোনা-প্রভাবিত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য যেখানে পরীক্ষা করা হয়, সেখানে কাজ করেন তিনি। চার জনের মধ্যে ইটালি-যোগে পর্যবেক্ষণাধীন এক মহিলার লালারসের নমুনা এ দিন পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। ওই চার জন ছাড়া মালয়েশিয়া থেকে ফেরা এক ছাত্র এবং মিশর-যোগে এক বৃদ্ধকে করোনা সন্দেহে আইডি-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। জয়পুরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক যুবক মায়ের অসুস্থতার জন্য কলকাতায় ফেরেন সোমবার। তাঁকে আইডি-তে পাঠানো হয়েছিল। স্বাস্থ্য ভবনের এক পদস্থ কর্তা জানান, ওই যুবককে আজ, বুধবার ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। তাঁর আর নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই।
কাকদ্বীপের এক যুবককে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই যুবক কিছু দিন আগে কেরল থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ওই যুবককে আলাদা ঘরে রেখে চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। আতঙ্কের কারণ নেই।’’ জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে অন্য এক যুবক কাকদ্বীপ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আজ, বুধবার থেকে নাইসেডের পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালেও করোনা পরীক্ষা হবে। আগামী দিনে আরজি কর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেও এই পরীক্ষা চালু করার পরিকল্পনা আছে। করোনার মোকাবিলায় জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের নিয়ে ‘সিওভিআইডি১৯’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, করোনা মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ করা জরুরি। সেই জন্যই এই গ্রুপ খোলা হয়েছে।