Dilip Ghosh

ইউজিসির টাকা ত্রাণে! দিলীপের মন্তব্যে বিতর্ক

বিজেপি নেতার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপাচার্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি করোনা ত্রাণ তহবিলে কত টাকা দান করছে, বিকাশ ভবন সেই তথ্য জানতে চাওয়ায় আগেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক জোরদার হয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যকে ঘিরে। দিলীপবাবু মন্তব্য করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় যে-টাকা মুখ্যমন্ত্রীর করোনা ত্রাণ তহবিলে দিচ্ছে, তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র টাকা। বিজেপি নেতার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপাচার্যেরা।

Advertisement

দিলীপবাবু বলেন, ‘‘খবর পেলাম, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা খাতে ইউজিসি-র বরাদ্দ টাকা মুখ্যমন্ত্রীর করোনা ত্রাণ তহবিলে রাজ্য সরকারকে দিচ্ছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি-র বরাদ্দ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। শিক্ষা খাতে ইউজিসি-র দেওয়া টাকা এই ভাবে অন্য খাতে খরচ করা যায় কি?’’

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, তাঁরা যে-ত্রিশ লক্ষ টাকা রাজ্যের তহবিলে দিয়েছেন, তা ইউজিসি থেকে পাওয়া টাকা নয়। রাজ্যের কাছ থেকে পাওয়া টাকাও নয়। কলেজের নিজস্ব তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য বলেন, ‘‘দূরশিক্ষায় পড়ুয়াদের ফি, বিভিন্ন পরীক্ষার ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিলে থাকে। তা থেকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানিয়ে দেন, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিক এবং উপাচার্য মিলিয়ে আরও ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে ত্রাণ তহবিলে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও জানান, তাঁরা ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে। ইউজিসি-র টাকা থেকে নয়। শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মীরা নিজেদের বেতন থেকে যে-টাকা দিয়েছেন, তা-ও পাঠানো হবে ত্রাণ তহবিলে। করোনায় কে কত দিচ্ছে, এই বিষয়ে যুগ্ম ডিপিআইয়ের নির্দেশ নিয়ে বিভিন্ন কলেজে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। কোনও সরকারি নির্দেশ ছাড়া দানের টাকার হিসেব বিকাশ ভবন কী ভাবে চাইতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেক অধ্যক্ষ।

Advertisement

আরও পড়ুন: কর্মীদের আয়ুর্বেদিক টোটকা দিল রেল

অভিযোগ উঠছে, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যদি দানের টাকা অনলাইনে দিতে না-পারেন, তা ব্যাঙ্কে জমা দিতে বলা হচ্ছে এবং শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা কত টাকা দান করবেন, বিশ্ববিদ্যালয় সেটাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কাউকেই টাকা জমা দিতে বলা হচ্ছে না। যে যেমন টাকা দান করছেন, সেটাই গ্রহণ করা হচ্ছে, কিছু নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।’’

বিতর্ক বেধেছে লকডাউনের মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে কি না, তা জানতে চাওয়ার বিষয়টি নিয়েও। রাজ্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)-র সহ-সভাপতি প্রবোধ মিশ্র বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষা দফতর অনলাইনে পঠনপাঠনের জন্য এত দিন উদ্যোগী হয়নি। আচমকা এই তথ্য জানতে চাওয়া বাস্তবসম্মত নয়।’’ গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস, বিদ্যাসাগর, নিউ আলিপুর, মহেশতলা কলেজের মতো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অবশ্য অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু করেছে। প্রবোধবাবু জানান, সকলে এটা পারেনি। কোথাও কোথাও কিছু বিভাগ বিচ্ছিন্ন ভাবে তা করছে।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধীন কিছু কলেজ ইতিমধ্যে প্রযুক্তির সাহায্যে ক্লাস শুরু করেছে। পার্থবাবু বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে যতটা শিক্ষা দান করা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যেন তার ব্যবস্থা করে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement