প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাসের চোখরাঙানিতে জমায়েত বন্ধ। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ। এই অবস্থায় রক্তদান শিবির বাতিল হতে শুরু করেছে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি জানাচ্ছে, বেশির ভাগ শিবিরই হয় ক্লাব বা কলেজ ভবনে। সেখানে তালা ঝুলে যাওয়ায় শিবির করার উপায় নেই। এমনকি কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের থানা-ভিত্তিক রক্তদান শিবিরও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বেসরকারি একটি ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্ত্রী তানিয়া দাস জানান, রাজ্যের ৫৫ হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগীর মাসে দু’বার রক্ত লাগে। লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ২৭০০ জনের রক্ত লাগে নিয়মিত। অস্ত্রোপচারে, ডায়ালিসিসে, প্রসবে ও পথ-দুর্ঘটনায় রক্তের প্রয়োজন হয়।
রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মী দীপঙ্কর মিত্র জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায়, বন্ধুবান্ধব মারফত মানুষকে সচেতন করে ব্লাড ব্যাঙ্ক পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়। আয়োজন করা হয় ছোট শিবিরের। কিন্তু করোনা-আতঙ্ক চেপে বসেছে। শিবিরে গিয়ে অচেনা মানুষের থেকে সংক্রমণ ছড়ালে কী হবে? তানিয়াদেবী বলেন, ‘‘চেনা-পরিচিতদের নিয়ে ছোট (১০ জন) দল গড়ে রক্ত দিতে হবে। ইচ্ছুক হলে আমরা যাব বাড়িতে। আলাদা ঘরে শিবির হবে। ভাইরাস আছে কি না, যাচাই করবেন চিকিৎসক।’’
গরম পড়লে এমনিতেই রক্তদানের প্রবণতা কমে যায়। এটা অনেকটাই পুষিয়ে দেয় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের উদ্যোগ। কিন্তু সেই শিবির বন্ধ। কেউ ভয়ে রক্ত দিতে চাইছেন না। দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, আগে ছাত্র সংগঠনগুলি নিয়মিত শিবিরের আয়োজন করত। সেগুলো বন্ধ। তিনি বলেন, ‘‘মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে নিয়মিত ৫০০ ইউনিট রক্ত বেরিয়ে যায়। এত রক্তের জোগাতে প্রতি রবিবার ১২-১৩টি শিবিরের আয়োজন করতে হয়। এ ছাড়াও শনিবারগুলিতে ৬-৭টি এবং সাধারণ দিনে ৩-৪টি শিবির করতে হয়। প্রতিটি শিবিরে গড়ে ৫০ ইউনিট রক্ত পাওয়া যায়।’’ কিন্তু সরকারি উদ্যোগের শিবিরও বাতিল হতে শুরু করেছে বলে জানান দীপঙ্করবাবু। ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রক শিবিরের আয়োজন করেছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরাই বারণ করে দিয়েছেন। এ ভাবে চললে কিন্তু সমস্যা বাড়তেই থাকবে,’’ বলেন দীপঙ্করবাবু।