—ফাইল চিত্র।
সংবিধান রক্ষায় পথে নেমেছিলেন তাঁরা। এ বার সঙ্কটে দেশের পাশে দাঁড়াতেই সিএএ-বিরোধী ধর্নায় জমায়েত বন্ধের ডাক দিলেন প্রতিবাদীরা। সোমবার রাজ্যের দুই প্রবীণ ইমামের এই আহ্বানে সাড়া দেন পার্ক সার্কাসে অবস্থানরত মহিলারা। অবস্থান শুরুর ৭৭ দিন পরে পার্ক সার্কাস মাঠের ছবিটা পাল্টাচ্ছে। জ়াকারিয়া স্ট্রিট, বেলগাছিয়া, হাওড়ার পিলখানা-সহ বিভিন্ন ধর্নামঞ্চ থেকেও সাড়া আসতে শুরু করেছে।
‘‘ভারতে করোনা-পরিস্থিতি বিশ্বে সব থেকে ভয়ঙ্কর হতে পারে। তাই এটাই সময়ের দাবি,’’ এ দিন ঘোষণা করেন রেড রোডের দু’টি ইদের নমাজের ইমাম ক্বারি ফজ়লুর রহমান। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এটা করতেই হবে। পাঁচ জনের বেশি লোকের জমায়েত বিপজ্জনক। লকডাউনের সময় এই আইন ভাঙলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে।’’ নাখোদা মসজিদের ইমাম শাফিক কাশমির কথায়, ‘‘ডাক্তারেরা বলছেন, জমায়েত বা হাত ধরাধরি থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়। এটা খেয়াল রাখুন। সঙ্কট কেটে গেলে নতুন করে প্রতিবাদ হবে।’’ শাহিন বাগের প্রতিবাদের সক্রিয় মুখ সোনু ওয়ারসি এ দিন জ়াকারিয়া স্ট্রিটের ধর্নামঞ্চে এক ফোন-বার্তায় ধর্না তোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘‘এখন কিছু দিন সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করেও প্রতিবাদ চলতে পারে।’’
কয়েকটি মঞ্চে প্রতিবাদী মহিলারা করোনা-বিপদের বিষয়টি বুঝতে পারছিলেন না। তাই ইমামদের তরফেই সচেতনতার ডাক উঠে এল। কাশমির ব্যাখ্যা, ‘‘এটা পরাজয় নয়। যুদ্ধবিরতিও নয়। দেশের সঙ্কটে দু’পা পিছিয়ে আসার কৌশলী রণনীতি।’’ অনেক ধর্নামঞ্চে জুম্মার আগের রাতে প্রতিবাদীদের রোজার আসরও বাড়িতে করতে বলেছেন ইমামেরা।
আরও পড়ুন: তালাবন্দি কলকাতায় যান উধাও, ঠাঁই নেই সরকারি বাসেও
দুই প্রবীণ ইমামেরই মত, বয়স্কেরা এখন বাড়িতে নমাজ পড়লেই মঙ্গল। এতে ধর্মাচরণে ত্রুটি হবে না। কাশিমপুর, দত্তপুকুরে প্রশাসনের অনুরোধে দু’টি ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ করা হয়। রাজ্য হজ কমিটির সদস্য, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ সচেতনতার বার্তা দিতে বেশ কয়েকটি মসজিদে যান। তাঁর বার্তা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনুন। লকডাউনের আইন মানুন। মসজিদে আজানের পরে কিছু দিন বাড়িতে নমাজ পড়ুন।’’
সিএএ-ধর্না উঠলেও মঞ্চগুলি থাকছে। সেখানে পোস্টারে লেখা হবে, ‘মানবিকতার স্বার্থে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত’। পুলিশও এ দিন পার্ক সার্কাসে গিয়ে কথা বলে। ৫-৬ জনের বেশি কখনওই মাঠে থাকবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন প্রতিবাদীরা।