Corona Cases in West Bengal

রাজ্যে নিঃশব্দে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা! কোন কোন জেলায় বাড়ছে সংক্রমণের হার?

কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে রাজ্যে। এ নিয়ে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আগেই সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ২০:১৫
Share:

রাজ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় বেড়েছে কোভিড পজিটিভিটি রেটও। ফাইল চিত্র

চোখের আড়ালে একটু একটু করে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক একটি তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে এই মুহূর্তে ২ হাজারের কাছাকাছি করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। রাজ্যে বেড়েছে করোনা সংক্রমণের হারও।

Advertisement

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেশের ৩ রাজ্য, মহারাষ্ট্র, কেরল এবং দিল্লিতে উত্তরোত্তর বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। পশ্চিমবঙ্গের সংক্রমণের সংখ্যা এতদিন ছিল কমের দিকে। কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্য বলছে বাংলাতেও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ। যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, অ্যাক্টিভ কেস (রাজ্যে বর্তমান করোনা আক্রান্ত রোগী)-এর সংখ্যার থেকেও বেশি জরুরি দৈনিক কতজন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যে সেই সংখ্যাটা কেরল বা দিল্লির মতো বাড়েনি। তবে আপাতত ১০০-র আশপাশেই রয়েছে। অর্থাৎ দৈনিক রাজ্যে কমবেশি ১০০ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

তবে পরীক্ষায় নির্ণীত করোনা রোগীর পাশাপাশি উপসর্গহীন রোগীও রয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। করোনা রোগের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে রোগী আসছেন, তাঁদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে বেসরকারি হাসপাতালেও করোনা রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসক দেবরাজ জানিয়েছেন, পাকতন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও জ্বর, গলা ব্যথার সমস্যা দেখা দিচ্ছে রোগীদের মধ্যে। বয়স্ক বা কোমর্বিডিটি থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকের তাই পরামর্শ, উপসর্গহীন বলে কিছু নেই। কিছু না কিছু উপসর্গ থাকছেই। তাই করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভাল। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসও বলেন, আগের থেকে কোভিড পরীক্ষা করার প্রবণতা কমেছে তবে উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় বেড়েছে কোভিড পজিটিভিটি রেটও। আইসিএমআরের পোর্টালে বিভিন্ন রাজ্য এবং পরীক্ষাগারগুলি তাদের কোভিড পরীক্ষার যে তথ্য পূরণ করে থাকে, তাতে দেখা যাচ্ছে গত ৯ থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতায় পজিটিভিটি রেট ছিল ১৩.১৫ শতাংশ, ২০ থেকে ২৬ এপ্রিলে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৬৬ শতাংশে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, বাস্তবে এই হার ৮-১০ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, কালিম্পং, নদিয়াতে পজিটিভিটি রেট বেশির দিকে।

কোভিড বাড়ার সঙ্গে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে রাজ্যে। শুক্রবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বীরেশ দত্ত নামে ৭৭ বছরের দমদমের এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। পুত্র সবভিত দত্ত জানান তাঁর বাবা কোভিড আক্রান্ত ছিলেন এ ছাড়া সিওপিডিতে ভুগছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার ২৪ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তিনিও কোভিড আক্রান্ত ছিলেন বলে জানান হাসপাতালের এক চিকিৎসক। তবে ইনিও কোভিড ছাড়া অন্যান্য রোগেও ভুগছিলেন।

সম্প্রতি নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যে কোভিড বাড়তে পারে। আপনারা আবার একটু সতর্ক হোন। ভিড়ের জায়গায় গেলে মাস্ক পরুন। হাত পরিষ্কার রাখুন।’’ ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফেও নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরা এবং কোভিড উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement