Coronavirus

বেশি টেস্টেও কমল আক্রান্তের সংখ্যা, করোনায় সাময়িক স্বস্তি রাজ্যের?

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২২১৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৫৩ হাজার ৯৭৩। মৄত্যু হয়েছে ৩৫ জনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ২২:১২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে নতুন করে সপ্তাহে দু’দিন সম্পূর্ণ লকডাউনের পথে ফিরেছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার লকডাউন হয়েছে। আগামিকাল শনিবার ফের সম্পূর্ণ লকডাউন। এই ব্যবস্থা কতটা কার্যকরী হবে, তা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে তার মধ্যেই রাজ্যে করোনার ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত। শুক্রবারও নতুন করে আক্রান্ত হলেন আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে বৃহস্পতিবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। অথচ টেস্ট হয়েছে আগের দিনের চেয়ে বেশি। ফলে বেশি টেস্ট করেও কম আক্রান্ত হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি রাজ্য প্রশাসনে।

Advertisement

রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছিল বৃহস্পতিবারই। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২১৬ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৫৩ হাজার ৯৭৩। সমান তালে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছিলেন ৩৬ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ২৯০।

করোনার ইতিহাস বলছে, সারা বিশ্ব এবং ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা শহরাঞ্চলে বেশি। সেই দিক থেকে গোড়া থেকেই উদ্বেগ ছিল কলকাতা নিয়ে। সময় যত গড়াচ্ছে, মহানগর নিয়ে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের কপালে। শুক্রবার সন্ধ্যার পরিসংখ্যান অনুযায়ী কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৯ জন। বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৩ জন বেশি। উদ্বেগ বাড়ছে শহরের মৃতের সংখ্যা নিয়েও। রাজ্যে এ দিন যে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে কলকাতারই ১৬ জন।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

মহানগরের পাশাপাশি, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। তবে এ দিন অনেক জেলাতেই এক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৬৭, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪৩, হাওড়ায় ১৮৯, হুগলিতে ৭৪, পূর্ব বর্ধমানে ১৬, পশ্চিম বর্ধমানে ২৫, মুর্শিদাবাদে ৫ এবং নদিয়ায় ১৫ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা বাদ দিয়ে সব জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। উত্তরবঙ্গের মধ্যে কোচবিহারে ১৩, দার্জিলিঙে ৮৯, জলপাইগুড়িতে ৬৬, উত্তর দিনাজপুরে ৩০, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৬, মালদহে ৫২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

বেশি টেস্ট হওয়ার পরেও আক্রান্তের সংখ্যা কম হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারও কমেছে। প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫১২ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এ রাজ্যে। আর ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ১৫ হাজার ৪৮৫ জনের। গত কাল বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৫৫৮। তার মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ২ হাজার ২১৬ জনের। অর্থাৎ প্রায় ৯০০টি টেস্ট বেশি হলেও নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে ২২০। শুক্রবারের সংক্রমণের হার ১৪.৩১ শতাংশ। আগের দিনের সংক্রমণের হার ছিল ১৬.৭৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: নজরে ২০২১, তৃণমূলে ব্যাপক রদবদল, ঘর গোছালেন মমতা​

এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩৩ হাজার ৫২৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে এ দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৮৭৩ জন। এখন রাজ্যে মোট সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ১৫৪। সুস্থতার হার ৬২.১২ শতাংশ।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড় পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement