দিল্লি ফেরত যুবকের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ সামনে আসার পরেই শুক্রবার সুনসনা হলদিয়া বন্দর। ওই ব্যক্তি কর্মসূত্রে হলদিয়া বন্দরে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র
দিল্লির নিজামুদ্দিনে ধর্মীয় সম্মেলনে যোগ দেওয়া হলদিয়ার বাসিন্দার শরীরে মিলল করোনাভাইরাস। হলদিয়া বন্দরে একটি বেসরকারি সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত ওই যুবককে বৃহস্পতিবার রাতেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হলেও ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ নেই বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
ওই ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসার পরেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে হলদিয়া বন্দরে। শুক্রবার থেকে বন্দরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ‘ম্যানুয়াল হ্যান্ডলিং’ সংক্রান্ত (যে সব কাজে মানুষের প্রয়োজন হয়। যেমন, জাহাজে বা ট্রেনে মাল ওঠানো- নামানো, ক্রেন চালানো) কাজ। আপাতত শুধু ‘মেকানিক্যাল’ কাজকর্ম (যন্ত্রের সাহায্যে পেট্রোলিয়াম জাতীয় সামগ্রী বহন) চালু রয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তিনি গত ২৩ মার্চ দিল্লি থেকে ফিরে ২৫ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এর পরেও ওই ব্যক্তি ২৬ মার্চ বন্দরে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাঁকে ১ এপ্রিল হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়। পরে তাঁর লালারস সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রিপোর্টে এলে দেখা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। রাতেই তাঁকে বেলেঘাটায় পাঠানো হয়।
ওই ব্যক্তির পরিবারের ৫ সদস্য এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা ৯ জনকেও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়েছে। শুক্রবার তাদের লালারস সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য নিতাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘দিল্লি ফেরত এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাঁর করোনার প্রাথমিক কোনও উপসর্গ নেই। ব্যক্তির পরিবার-সহ তাঁর বন্ধুদের হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়েছে।’’
এদিকে, ওই ব্যক্তি হলদিয়া বন্দরে কাজে যোগ দেওয়ায় বন্দরেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর জেরে এ দিন বন্দরে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বন্দর সূত্রে খবর, সকালে নিয়ম মতো অনেক শ্রমিক কাজ করতে এসেছিলেন। কিন্তু কর্মস্থলে এসে তাঁরা জানতে পারেন ওই ইঞ্জিনিয়ার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। খবর শুনে সবাই আতঙ্কে কর্মস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান। হলদিয়া বন্দরের আধিকারিক অভয় মহাপাত্র বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি করোনায় আখ্রান্ত হয়েছেন জেনেই শ্রমিকেরা কর্মস্থল থেকে চলে যান। বন্দরের ম্যানুয়াল হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পুরোপুরি বন্ধ।’’