প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশজুড়ে পালিত জনতা কার্ফু—নিজস্ব চিত্র।
করোনা আক্রমণ রুখতে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ জুড়ে চলছে জনতা কার্ফু। সকাল থেকে জনশূন্য কলকাতার রাজপথ। দু’একটি ট্যাক্সি, হাতে গোনা সরকারি বাস ছাড়া পথে নামেনি প্রায় কোনও গণপরিবহণ। বাকি রাজ্যের ছবিটাও কার্যত একই। সাতসকালে ফাঁকা লোকাল ট্রেনের কামরা। কোনও কোনও বাজারে দু’একটা দোকান খুললেও দেখা পাওয়া যায়নি ক্রেতার। চেনা ব্যস্ততার সামান্যতম চিহ্ন নেই বেহালার শকুন্তলা পার্ক, বকুলতলা বাজার থেকে উত্তর কলকাতার পাতিপুকুরের পাইকারি মাছের বাজারে।
এখনও অবধি দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩১৫। এ রাজ্যেও ৪ জনের শরীরে মিলেছে ভাইরাসের অস্তিত্ব। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশবাসীর কাছে সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ রবিবার, সকাল সকাল সাতটা থেকে রাত ন’টা সেই অনুযায়ী পালন হচ্ছে জনতা কার্ফু। প্রথম পর্যায়ে ১৪ ঘণ্টা চলবে এই কার্ফু। গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দিতে জনতার কাছে স্বেচ্ছায় ঘর বন্দি থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, সামাজিক দূরত্ব তৈরি করতেই মানুষের স্বার্থে ওই জনতা কার্ফু ডাকা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনতা কার্ফুর সিদ্ধান্ত একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্ত আরও আগেই নেওয়া উচিত ছিল। স্বাস্থ্য কর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই প্রয়োগের ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে আরও বড় মাপের লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে সরকার। আজ তারই জল মাপা হবে। জনতা কার্ফু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সতর্ক থাকুন। আতঙ্কিত নয়। বাড়িতে থাকাই কেবল গুরুত্বপূর্ণ নয়, আপনি যে শহরে রয়েছেন সেখানেই থাকুন। অহেতুক সফরে আপনার বা অন্যদের কারও লাভ হবে না। এই সময়ে আমাদের প্রতিটি ছোট পদক্ষেপও বড় মাপের প্রভাব ফেলতে পারে।’’
আরও পড়ুন: আজ জনতা কার্ফুর সাফল্য দেখেই পরের ধাপ
রবিবারের চেনা ব্যস্ততা উধাও, জনতা কার্ফুর ছাপ বাজারে—নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, যে গতিতে ভারতে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে, তাতে সংক্রমণের জাল ছিন্ন করাটাই এখন সরকারের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। আর তা কার্যকর করতে গেলে এ ভাবে ‘লকডাউন’ করা ছাড়া কোনও উপায় খোলা নেই বলেই মত স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের।
জনহীন দুর্গাপুরের স্টেশন রোড—ছবি: অনুপ্রিয় মুখোপাধ্যায়
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল বলেন, ‘‘জনতা কার্ফুকে সতকর্তামূলক পদক্ষেপ হিসাবে দেখা উচিত। বাড়িতে থাকলে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো অনেকটাই আটকানো সম্ভব হবে। বিশেষ করে নতুন করে সংক্রমণ রোখাটাই চ্যালেঞ্জ।’’