Coronavirus in West Bengal

কেস সামারি নেই, চিকিৎসায় দেরি

২৪ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সারা রাজ্যে মোট আক্রান্তের নিরিখে মৃত্যুর হার হল ২.৪৫ শতাংশ।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০৬:১৮
Share:

ছবি পিটিআই।

জ্বর-কাশি-মৃদু শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে বারাসতের একটি নন-কোভিড স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ৫৭ বছরের প্রৌঢ় ভর্তি ছিলেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁকে নির্দিষ্ট কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। রেফার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে রোগী কোভিড হাসপাতালের ওয়ার্ডে পৌঁছলেন অন্তত ঘণ্টাতিনেক পরে। সেই সময়ে কার্যত চিকিৎসা না হওয়ায় দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে এক সময়ে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়।

Advertisement

নন-কোভিড হাসপাতাল থেকে কো-মর্বিডিটিতে আক্রান্ত হাওড়ার বাসিন্দা ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধকে কোভিড সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। প্রবল শ্বাসকষ্টের রোগীর কী ভাবে চিকিৎসা শুরু করবেন তার জন্য রেফার সেন্টারের ‘কেস সামারি’ চান ওয়ার্ডের চিকিৎসকেরা। কিন্তু ‘কেস সামারি’ কোথায়? কার্যত অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো পরিস্থিতিতে চিকিৎসা শুরু করলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না!

২৪ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সারা রাজ্যে মোট আক্রান্তের নিরিখে মৃত্যুর হার হল ২.৪৫ শতাংশ। ওই সময় কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও হাওড়ায় মৃত্যুহার যথাক্রমে ৩.৪৫, ২.৩৬, ২.৪৫ শতাংশ। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে গত কয়েক দিনে সাতটি অ্যাডভাইজ়রি তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত পরিদর্শক দল। সেই ‘প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিমে’র অভিজ্ঞতা, চিকিৎসা পরিষেবায় ফাঁকও কোভিড রোগীর মৃত্যু রোধে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্য চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘কেস সামারি যেহেতু নেই, রেফার হওয়া রোগীকে ডাক্তারবাবু যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার কথা ভাবছেন তা আগের হাসপাতালে দেওয়া হয়েছিল কি না তা জানা নেই।’’ আর এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এমনিতেই এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে রোগীকে পাঠানোর মধ্যে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। কোভিডে তা অনেক বেশি হচ্ছে।’’ রোগীকে স্থিতিশীল না করেই অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়ার জন্যও মৃত্যু বাড়ছে বলে মত তাঁদের।

এই আবহে হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার চারটি কোভিড হাসপাতালে ‘ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল’ মানা হচ্ছে কি না, তা দেখবে ‘সুপার স্পেশালিস্ট টিম’ (এসএসটি) । প্রতি দিন তাঁদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট আকারে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যকে জানাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অ্যাডভাইজ়রির মাধ্যমে সকলকে সতর্ক করা হল। এর পরও গাফিলতি থাকলে তাদের ধরা হবে। মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমেছে। ছোটখাটো নার্সিংহোমে আরও নজরদারি প্রয়োজন। মৃত্যুর হার কমাতে যা করণীয় সবই করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement