ফাইল চিত্র।
আপনজনকে দেখার জন্য জেলখানার সামনে অপেক্ষার দিন কার্যত শেষ। এখন স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে পৌঁছনো যাচ্ছে জেলবন্দির কাছে। পরিষেবার নাম ই-মুলাকাত। করোনা-আবহে যা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বন্দি, তাঁদের আত্মীয়স্বজনের কাছে, দাবি কারা দফতরের। প্রযুক্তি নির্ভর সাক্ষাতের এই পদ্ধতির ব্যবহারের ফলে জেলে করোনা তেমন ছড়াতে পারেনি। কারা দফতরের এডিজি-র নির্দেশে প্রত্যেক জেলে ই-মুলাকাত বাড়ানোর নির্দেশ হয়েছে।
জেলবন্দিদের দেখতে গেলে নির্দিষ্ট নিয়মে আবেদন করতে হয়। অনুমতি পেলে নির্দিষ্ট দিনে জেলের বাইরে অপেক্ষা। তার পরে, দেখা। পুরনো এই পদ্ধতি চালু আছে ঠিকই, তবে এখন সাক্ষাৎপ্রার্থীদের জেলে যেতে হয় মূলত বন্দিদের পোশাক ও নিত্য ব্যবহারের জিনিসপত্র দিতে। কথা বলার জন্য ‘ই-মুলাকাত’। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল প্রিজ়ন ইনফর্মেশন পোর্টাল’ মারফত নির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হয়। অনুমতি পেলে নির্দিষ্ট দিনে ভিডিয়ো কলে বন্দির সঙ্গে কথা বলানো হয়। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘করোনা-সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখে আমাদের আশঙ্কা হয়েছিল, জেলে মহামারি দেখা দিতে পারে। তখন ভিড় কমানোই মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল। ই-মুলাকাত ব্যাপক ভাবে কার্যকর হওয়ায় সংক্রমণ তেমন ছড়ায়নি।’’
ই-প্রিজন প্রকল্পের নোডাল অফিসার প্রসূন মাজি বলেন, ‘‘২০১৮-এ দমদম জেলে এই প্রদ্ধতি চালু হয়েছিল। প্রযুক্তিগত সমস্যা কাটিয়ে ধীরেধীরে ক্রমশ তা জনপ্রিয় হতে থাকে। কেন্দ্রের সরকারের কাছে রাজ্যের ৬০টি জেলেই ই-মুলাকাত কার্যকর করার আবেদন করেছিলাম। অনুমতি মেলার পরে এখন সব জেলেই তা চালু হয়েছে।’’
কারা দফতরের তথ্য বলছে, ২০১৮-এ ওই পদ্ধতির ব্যবহার হয়েছিল মাত্র পাঁচ বার। গত বছর (করোনা সংক্রমণ যখন শীর্ষে) ই-মুলাকাতের সংখ্যা ছিল ৩৩১৩। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১৭৯৯টি ই-মুলাকাত হয়েছে। অনেক সময়, মামলা নিয়ে বন্দিদের সঙ্গে তাঁদের আইনজীবীরাও কথা বলেন এই পদ্ধতিতে। এ ভাবে এক জেলে থাকা বন্দির সঙ্গে অন্য জেলে থাকা আত্মীয়েরও কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। জেলবন্দি বিদেশিরাও নিজভূমে থাকা পরিজনেদের সঙ্গে কথা বলছেন।