উর্দি পরে গাড়ি ভাঙচুর সুজাপুরে, ধর্মঘটে পুড়ল পুলিশের ভ্যানও

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ যদি এই কাজ করে থাকে, তা হলে তা খতিয়ে দেখতে হবে।”

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

সুজাপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:১৮
Share:

উর্দি পরে গাড়ি ভাঙচুরের এই ছবিই ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (ডান দিকে) মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুরে জ্বলছে পুলিশের গাড়ি। বুধবার। ছবি: অভিজিৎ সাহা

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেসের ডাকা বন্‌ধকে ঘিরে বুধবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুর। সেখানে পুলিশকে যেমন আক্রমণ করা হয়েছে, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে পুলিশ ও র‌্যাফের উর্দি পরা কয়েক জন কিছু বেসরকারি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। ভিডিয়োটির সত্যাসত্য অবশ্য আনন্দবাজার যাচাই করেনি।

Advertisement

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ যদি এই কাজ করে থাকে, তা হলে তা খতিয়ে দেখতে হবে। পুলিশকে কারা প্ররোচনা দিল, তা-ও দেখতে হবে। তদন্তের আগে মন্তব্য করা যায় না।’’ জেলার এসপি অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে পুলিশের পোশাক পরা কয়েক জন ভাঙচুর করছে। কিন্তু অনেক দূর থেকে তোলা বলে কারও মুখচোখ দেখা যাচ্ছে না। আমরা খতিয়ে দেখছি, কারা ছিল। তার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রাত পর্যন্ত অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ জাতীয় সড়কের ধারে নয়মৌজা মাঠে পুলিশের একাধিক গাড়ি জ্বলতে দেখা যায়। সেগুলির পাশেই ছিল একাধিক বেসরকারি যাত্রিবাহী ছোট গাড়ি। ভিডিয়োয় দেখা যায়, পুলিশের উর্দি পরা কিছু লোক লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে সেগুলি ভাঙচুর করছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘পুলিশ এবং শাসক দলের প্ররোচনায় একটা ঘটনা ঘটল, যাতে ধর্মঘটকারীদের কলঙ্কিত করা যায়। পুলিশ যা ভূমিকা নিয়েছে, তাতে যোগীর রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের তফাত কোথায়!’’ সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘হিংসা বা ভাঙচুর সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু এখানে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ নিজেরাই গাড়ি ভাঙছে। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে প্রতিবাদীদের জ্ঞান দেন!’’ যা শুনে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘সিপিএম নেতারা শিশুসুলভ আচরণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বেশি আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁরা আসলে বিজেপির হাতই শক্ত করছেন।’’

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বন্‌ধ সমর্থকেরা। একটি হোটেল খুলেছে দেখে সেটি ভেঙেচুরে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চলে সরকারি ও বেসরকারি বাসেও। লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। তাদের লক্ষ্য করে পাল্টা ইটবৃষ্টিও শুরু হয়। মালদহের ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথের সার্ভিস রিভলভারও ছিনতাই করা হয় বলে অভিযোগ। সারা দিনে তার খোঁজ মেলেনি। সংঘর্ষে প্রশান্তবাবু-সহ ৯ জন পুলিশ আহত হন। পুলিশের পাঁচটি ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। সে-কথা অবশ্য পুলিশ অস্বীকার করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement