আগামী ১৪ মার্চ ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন হতে চলেছে মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ে (গোপ কলেজ)। কলেজের সভাঘরেই হবে শহিদ স্মরণ। কিন্তু তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) পরিচালিত কলেজের ছাত্রী সংসদের এই উদ্যোগ ঘিরে ইতিমধ্যে বিতর্ক বেধেছে।
বিরোধীদের যুক্তি, কোনও রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন যে কোনও দিবস পালন করতে পারে। কিন্তু কলেজের নির্বাচিত ছাত্রী সংসদের উদ্যোগে কলেজে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন করা অনুচিত। কারণ, নির্বাচিত ছাত্রী সংসদ তো কোনও রাজনৈতিক দলের সংগঠন নয়। এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌমিত্র ঘোড়ইয়ের কটাক্ষ, ‘‘দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সিঙ্গুরের নাম পাঠ্যবইয়ে তুলে দিয়েছেন। আর দিদির বোনেরা কলেজে নন্দীগ্রাম দিবস পালন করবে, এতে আশ্চর্যের কী আছে। এই তো পরিবর্তনের নমুনা!’’
১৪ মার্চ দিনভর একগুচ্ছ কর্মসূচি থাকছে। সকালে শহিদ স্মরণে রক্তদান শিবির, দুপুরে স্মরণ সভা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নন্দীগ্রামের ‘শহিদ জননী’ বিধায়ক ফিরোজা বিবি। থাকার কথা তৃণমূল বিধায়ক দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তীর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে ইতিমধ্যে ছাত্রীদের নির্দেশও দিয়েছে কলেজের ছাত্রী সংসদ। সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা সুকৃতি হাজরা বা সভানেত্রী সুতপা সাঁতরা এই উদ্যোগে অন্যায় কিছু দেখছেন না। তাঁদের মতে, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলন কোনও দল বা সংগঠনের নয়, এটা গণ-আন্দোলন। তাই কলেজে শহিদ স্মৃতি তর্পণের আয়োজন হয়েছে।’’ গোপ কলেজের দায়িত্বে থাকা টিএমসিপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শপথ চক্রবর্তী এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘ছাত্রী সংসদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নন্দীগ্রামের গণ-আন্দোলনকে বিশিষ্টজনেরা সমর্থন করেছেন। তত্কালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী গুলিতে জখমদের দেখতে হাসপাতালে যান। তা হলে কেন ছাত্রী সংসদের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বুঝছি না।’’
কলেজে কি ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন করা উচিত? গোপ কলেজের অধ্যক্ষা জয়শ্রী লাহা বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের এই কর্মসূচি ছাত্রী সংসদের। আমরা সহযোগিতা করছি মাত্র।’’ তবে, এমন অনুষ্ঠানে কলেজ কর্তৃপক্ষও সহযোগিতা করতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছে বিরোধীরা।