স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা পদে নিয়োগের জন্য ফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল বৃহস্পতিবার। মাসকয়েক আগেই ওই পদের জন্য ইন্টারভিউ হয়েছিল। তা বাতিল করে ফের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনগুলি।
মাসকয়েক আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য অবসর নেন। তার পরে ওই পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বাস্থ্য দফতর। তাতে প্রার্থীদের যোগ্যতামানের বিষয়ে স্পষ্ট করে অনেক কিছু উল্লেখ করা ছিল না বলে অভিযোগ। রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রফেসর পদে থাকা চিকিৎসক মিলিয়ে ১১ জন আবেদন করেন। তাঁদের ইন্টারভিউ হয়। কিন্তু ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ প্রার্থী ওই পদে বসবেন, তা নিয়েই কোন্দল শুরু হয়।
শেষে অবসরপ্রাপ্ত এক বিশেষ সচিবকে কার্যনির্বাহী স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা পদে বসানো হয়। তখন স্বাস্থ্য শিবিরে জল্পনা বাড়তে থাকে। কানাঘুষো শোনা যায় যে, স্বাস্থ্য দফতরে বিশেষ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর (নর্থ বেঙ্গল লবি) পছন্দের প্রার্থীকেই ওই পদে বসানো হবে। জেলার একটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা করা হচ্ছে বলেও রটে যায়। এর মধ্যে সম্প্রতি স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা পদে নিয়োগের নিয়মে কিছু বদল ঘটিয়ে গেজ়েট নোটিফিকেশন করে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে জানানো হয়, ৫৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে বয়স হতে হবে আবেদনকারীর। প্রার্থীদের মধ্যে তিন জনের নাম বাছাই করে রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। তা থেকে এক জনকে চূড়ান্ত করবে প্রশাসনের শীর্ষ মহল।
তখনই জানানো হয়, আগের ইন্টারভিউ প্যানেল বাতিল। অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘ডিএমই নিয়োগ নিয়ে নাটক চলছে। কেন সব কিছু নতুন করে হচ্ছে? তা হলে কি যাঁরা ইন্টারভিউ দিলেন, তাঁদের যোগ্যতা ছিল না? সিনিয়র শিক্ষক-চিকিৎসকদের অসম্মান করার অধিকার কে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে? শাসকদলের লবিবাজি ও দফতরকে বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’’
বিজেপির চিকিৎসক সেলের পশ্চিমবঙ্গ শাখার আহ্বায়ক শারদ্বত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার।’’ সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘ডিএমই পদপ্রার্থীর যোগ্যতার মাপকাঠি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছিলাম। রাজ্যে যোগ্য চিকিৎসকের অভাব নেই। নিয়ম মেনে দ্রুত নিয়োগ করা হোক।’’