মুর্শিদাবাদে অধীর-দুর্গ ঘিরে ফেলার ব্যাপারে প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। জঙ্গিপুর এবং জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের পর বুধবার সেই কৌশল মতোই বিরোধী শিবিরের সাত জন কাউন্সিলর ভাঙিয়ে এনে বেলডাঙা পুরসভার দখল নিল তৃণমূল। বেলডাঙাতে তৃণমূলের এক জনও নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিল না। কিন্তু পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান-সহ কংগ্রেসের ৬ জন এবং আরএসপি-র এক জন কাউন্সিলরকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলে সামিল করিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘বেলডাঙাও এখন আমাদের। দেখবেন ডিসেম্বর মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস নামক কোনও বস্তু থাকবে না। একই হাল হবে মালদহে।’’ এ বারের ভোটে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে তৃণমূলের সাফল্য বিশেষ ছিল না। এ বার ভিন্ন পথে এই দুই জেলায় রাজনৈতিক দখল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক দল। এবং এই সমরে দিদির সেনাপতি হলেন, তৃণমূলের যুব নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
অবশ্য রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের এই দ্রুত ভাঙনের অন্য কারণও রয়েছে। একে তো, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে শুভেন্দুর লড়াই ব্যক্তিগত স্তরে চলে গিয়েছে। ভিন্ন রাজনৈতিক দলে থাকলেও একদা উভয়ের সখ্য ছিল। কিন্তু সেই ‘অধীরদা’-কে সবক শেখাতে এখন জেদ ধরেছেন শুভেন্দু। দ্বিতীয়ত, বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পরেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দীর্ণ অবস্থা কংগ্রেসের। মানস-মান্নান কাদা ছোড়ছুড়ি অব্যহত। তাতে দলের নীচুতলার কর্মীদের মনোবল আরও ভেঙে যাচ্ছে। শুধু পুরসভা নয়, ভাঙিয়ে আনার খেলা চলছে জেলা পরিষদেও। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের এক কংগ্রেস সদস্যও এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে জেলা পরিষদে তৃণমূলের সদস্য বেড়ে ১৯ হল বলে শুভেন্দুর দাবি।
অধীর চৌধুরী দৃশ্যত কিছুটা অসহায়। তাঁর কথায়,‘‘এটা রাজনীতি নাকি? হলদিয়া লুঠের টাকায় আর ভয় দেখিয়ে বিরোধী দল ভাঙানো হচ্ছে। তবে ৬ টা কাউন্সিলর চলে যাওয়া মানেই মানুষের আস্থা লাভ নয়।’’