প্রতীকী চিত্র।
প্রকাশ্যে বল ছেড়ে রাখা হচ্ছে দিল্লির কোর্টেই। কিন্তু আসন্ন লোকসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষেই সওয়াল করছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বড় অংশ। তাতে আপত্তি নেই এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতাদেরও। তবে আসন ধরে ধরে আলোচনা শুরুর জন্য তৎপর হতে হবে বামেদেরই, এমনটাই চান কংগ্রেস নেতৃত্ব।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের হাল পর্যালোচনা করতে শুক্রবার বিধান ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে ছিলেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতা গৌরব গগৈ এবং তাঁর দুই সহকারী পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ ও মহম্মদ জাভেদ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র লোকসভা ভোটে একলা লড়ার পক্ষেই বৈঠকে সওয়াল করেছেন। কিন্তু রাজ্যে ২০১৪ সালে একা লড়ে কংগ্রেস মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও পুরুলিয়া জেলায় ৭টি আসনে ২০ থেকে ৫১% ভোট পেয়েছিল এবং বাকি আসনগুলিতে আহমরি কিছু পায়নি— এই খতিয়ান দেখাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্বের অনেকেই। পরবর্তী পাঁচ বছরে বরং সংগঠন এবং দলের প্রভাব আরও ক্ষয় পেয়েছে। এই যুক্তি খারিজ করেননি গৌরব। তিনি জেলা সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা সেরে প্রদেশ সভাপতিকে অবস্থান চূড়ান্ত করতে বলেছেন।
কয়েক দিন আগে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ডাকা বিজেপি-বিরোধী ব্রিগেড সমাবেশে মল্লিকার্জুন খড়গে কেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বার্তা নিয়ে এসেছিলেন, বৈঠকে এ দিন তার পরিপ্রেক্ষিত ব্যাখ্যা করেছেন গৌরব। সেই বার্তার সঙ্গে তৃণমূলের প্রতি সুসম্পর্কের যে যোগ নেই, তা-ও বুঝিয়েছেন তিনি। বৈঠকের পরেও গৌরব বলেছেন, তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তাঁরা আইন অমান্য আন্দোলন করছেন, কর্মীরা মার খাচ্ছেন। এর পরে আর তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা আসে না, তৃণমূলও তেমন কথা বলেনি। গৌরবের কথায়, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চান একা লড়তে। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের সব মতই বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে, যা নিয়ে এখন প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাই না। আমরা চাই, রাজ্যের অবস্থান জেনে এআইসিসি দ্রুত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিক।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের এক বর্ষীয়ান নেতাকে সিপিএমের সঙ্গে ঘরোয়া আলাপচারিতা শুরু করার দায়িত্বও দিয়েছেন গৌরবেরা।
সোমেনবাবু অবশ্য এ দিন ফের বলেছেন, ‘‘বামেদের সঙ্গে ২০১৬ সালে সমঝোতা করেই বিধানসভায় লড়েছিলাম। তার পরে বামেরাই সমঝোতা ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছে। সুতরাং, কথা বললে তাদেরই বলতে হবে। আমরা তো ভিক্ষাপাত্র নিয়ে কারও পিছনে ঘুরে বলব না, আমায় নাও!’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, প্রদেশ সভাপতির এমন মন্তব্য়ের প্রতিক্রিয়ায় ‘বাগ্যুদ্ধে’ জড়াতে চাননি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘বিজেপির সঙ্গে আমরা কংগ্রেসকে একেবারেই এক করে দেখছি না।’’