সঙ্কল্প শিবিরের পরে বিধান ভবনে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লাকুমার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও দলের অন্য নেতারা।
সঙ্কল্প শিবিরের সিদ্ধান্ত মেনে জেলায় জেলায় আগামী অগস্ট মাসে পদযাত্রায় নামতে চলেছে কংগ্রেস। আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে জনসংযোগের পাশাপাশি জেলায় জেলায় সংগঠনের হাল কেমন, তার হাতে-কলমে মূল্যায়ন ওই কর্মসূচির মাধ্যমে সেরে নেওয়াই কংগ্রেসের উদ্দেশ্য। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, গত বারের মতোই এ বারও পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে হবে না।
উদয়পুরে ‘নব সঙ্কল্প শিবির’ করেছিল সর্বভারতীয় কংগ্রেস। তার পরে এআইসিসি-র নির্দেশেই রাজ্যে রাজ্যে সঙ্কল্প শিবির চলছে। বিধান ভবনে রবিবার প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্কল্প শিবিরের শেষ দিনে এ রাজ্যে পদযাত্রার কর্মসূচি ঠিক হয়েছে। সম্ভবত ওই কর্মসূচির নাম হবে ‘সঙ্কল্প যাত্রা’। দু’দিনের সঙ্কল্প শিবিরের শেষে বিধান ভবনে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লাকুমার বলেন, ‘‘আগামী ৯ থেকে ১৪ অগস্ট প্রতি জেলায় ৭২ কিলোমিটার পদযাত্রা হবে। কোথায় ওই পদযাত্রা হবে, কোন কোন বিষয়কে ওই কর্মসূচির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, সেগুলো জেলা নেতৃত্বই ঠিক করবেন। তার পরে প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্য স্তরের পদযাত্রা করবে ১৫ অগস্ট।’’ সেই পদযাত্রা কোথায় হবে, তা-ও অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। চেল্লাকুমার জানিয়েছেন, সঙ্কল্প শিবিরের সূত্র মেনে আগামী ১১ থেকে ১৪ জুনের মধ্যে প্রতি জেলা কমিটিকে এক দিনের কর্মশালা সেরে নিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের এই শিবিরে চেল্লাকুমারের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন এআইসিসি-র দুই সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ ও শরদ রাউত এবং দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের তরফে পর্যবেক্ষক কেশর সিংহ।
দ্বিতীয় দিনে শিবিরে উপস্থিতির হার ছিল যথেষ্টই কম। দলের প্রথম সারির নেতাদের অনেককেই এ দিন আর দেখা যায়নি। কংগ্রেস নেতাদের অনেকের দাবি, দু’দিনের শিবিরের জন্য ঠিকমতো বার্তাই দেওয়া হয়নি তাঁদের। তারিখ ধরে যাঁকে যেমন আসতে বলা হয়েছে, তাঁরা তেমনই এসেছেন এবং চলে গিয়েছেন। শিবির আয়োজন ও ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা কোনও কমিটিও ছিল না। সূত্রের খবর, শিবিরে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার বলেন, দলের নীতি আগে ঠিক করা দরকার। কংগ্রেস একা চলবে নাকি জোটের পথেই থাকবে, জোট করলেই বা কার সঙ্গে করবে, নীতির উপরে দাঁড়িয়ে এ সব প্রশ্নের ফয়সালা না করলে কর্মীদের বিভ্রান্তি কাটবে না। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া দরকার। বিরোধী দল হিসেবে সিপিএম কিন্তু রাজ্য জুড়ে নানা প্রশ্নে রাস্তায় থেকে সংগঠনকে সচল রাখছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী শিবিরে ব্যাখ্যা করেছেন, কংগ্রেস তার শক্তি বাড়াতে চায়, যাতে জোট বা সমঝোতার ক্ষেত্রে দলের দর কষাকষির ক্ষমতা থাকে।
পরে চেল্লাকুমার পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জানান, ওই নির্বাচনের জন্য জোট নিয়ে তাঁরা কোনও আলোচনা করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তো প্রার্থী দিয়ে লড়চে চাই। কিন্তু প্রশ্ন হল, বাংলায় কি গণতন্ত্র আছে? বিগত পঞ্চায়েত বা পুরসভা ভোটের অভিজ্ঞতা সে কথা বলে না!’’ তাঁর পাশে বসে অধীরবাবুও বলেন, ‘‘সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য গত বার আদালতে গিয়ে লড়াই করতে হয়েছিল। রাজ্যে ২০ হাজার আসন শাসক দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছিল। আমাদের আশঙ্কা, এ বারও বিরোধীদের বাধা দেওয়া হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ