—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে মোট ৯১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানাল কংগ্রেস। আগেই তারা ৮২টি আসনের তালিকা ঘোষণা করেছিল। প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে রবিবার আরও ৯টি আসনের কথা জানানো হয়েছে। কংগ্রেসের লড়তে চাওয়া ৯১ আসনের মধ্যে চারটিতে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে বামফ্রন্ট। ফলে, জোটের মধ্যে জট রয়ে যাচ্ছে ওই চার আসন ঘিরেই।
তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটের জন্য আসনগুলি ধরে এআইসিসি এ দিন আরও ৩৪ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। প্রথম দফায় তারা ১৪ আসনে প্রার্থীদের নাম জানিয়েছিল। দ্বিতীয় দফার তালিকায় বেশির ভাগই কংগ্রেসের বর্তমান বিধায়ক। সেই তালিকায় আছেন চাঁপদানি কেন্দ্রে বর্তমান বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তবে বিদায়ী বিধায়কদের মধ্যে মুর্শিদাবাদের বড়ঞাঁ আসনে প্রতিমা রজক টিকিট পাননি। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদারকে। আলিপুরদুয়ারে দেবপ্রসাদ রায়, সিতাইয়ে কেশব চন্দ্র রায়ের মতো বর্ষীয়ান নেতাদের ফের প্রার্থী করা হয়েছে। শ্যামপুরে প্রার্থী অমিতাভ চক্রবর্তী, যিনি বামেদের সঙ্গে নিয়েই দীর্ঘ দিন ময়দানে রয়েছেন। পুরশুড়ায় মনিকা মল্লিক ঘোষ, ক্যানিং পশ্চিমে প্রতাপ মণ্ডল, উদয়নারায়ণপুরে অলোক কোলেদের প্রার্থী করেছে কংগ্রেস।
প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী এর আগে তাঁদের দলের তরফে ৮২টি আসনের তালিকা ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে পাঁচটি আসন এমন ছিল, যা নিয়ে বামেদের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। সেই পাঁচের মধ্যে বালিগঞ্জ ও জয়নগর আসনে ইতিমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম। মনোজবাবু এ দিন যে ৯ আসনের তালিকা দিয়েছেন, তার মধ্যে আছে জয়পুর। পুরুলিয়ার ওই আসনে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী আছে। জয়পুরে তাদের ঘোষিত আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় ফ ব-ও নেপাল মাহাতোর বাঘমুণ্ডি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে রেখেছে। দু’দফার তালিকা মিলিয়ে হিসেব করলে চারটি আসন ঘিরে বাম ও কংগ্রেস, দু’পক্ষেরই দাবি বহাল থাকছে। প্রদেশ কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘জট যা আছে, তা সামান্য। দু’পক্ষ বসে ঠিক ভাবে আলোচনা করলেই এই জটটুকু ছাড়িয়ে ফেলা সম্ভব।’’
সংযুক্ত মোর্চার আর এক শরিক আইএসএফ-ও বামেদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তাদের ২৬ আসনের তালিকা জানিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে ২০ আসনের প্রার্থী তালিকাও এ দিন ঘোষণা করেছে তারা। ভাঙড়, জাঙ্গিপাড়া, হাড়োয়ার মতো কয়েকটি কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। এর বাইরে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে আরও কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথাও আইএসএফ জানিয়ে রেখেছে। আইএসএফের সভাপতি শিমুল সরেন প্রার্থী হয়েছেন হরিপালে। প্রার্থী তালিকায় মিলন মান্ডি, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, গৌরাঙ্গ দাস, সঞ্চয় সরকার, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চন মৈত্রদের পাশাপাশিই আছেন সিরাজুদ্দিন গাজি, ফইজ়ল খান, নুরুজ্জামান, পিরজাদা বাইজিদ আমিন, জামালউদ্দিনেরা। যার প্রক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আইএসএফ-কে মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক তকমা যখন দেওয়া হচ্ছে, আমরা বলেছিলাম এটা পিছিয়ে পড়া সব সম্প্রদায়ের মানুষের মঞ্চ। ওদের প্রার্থী তালিকায় সেটাই স্পষ্ট হল।’’