সুজাপুরে বিস্ফোরণে ভেঙে পড়েছে কারখানার দেওয়াল। উড়ে গিয়েছে চাল (বাঁ দিকে)। মৃত শ্রমিকের দেহ পড়ে রয়েছে ভাঙা কারখানায়। —ফাইল চিত্র।
সুজাপুর বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু করলে রাজ্যের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। শুক্রবার দুপুরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সব খতিয়ে দেখে। বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া কারখানার ভিডিয়ো ফুটেজও সংগ্রহ করেন এসটিএফের সদস্যেরা। যদিও স্থানীয় থানায় এখনও এই নিয়ে কোনও মামলা রুজু হয়নি। শনিবার ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে রাজ্য পুলিশের ২ সদস্যের একটি ফরেন্সিক দলও।
বিজেপি অবশ্য এ দিন ফের দাবি করেছে, তদন্ত করাতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে। তাদের এই দাবি নস্যাৎ করে জেলা কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, কেন্দ্রের তরফে কোনও ক্ষতিপূরণ তো দেওয়া হলই না, উল্টে বোমার তত্ত্ব সাজিয়ে সুজাপুরকে বদনামের চেষ্টা করছে বিজেপি। তৃণমূলও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
সুজাপুরের বিধায়ক, কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী বৃহস্পতিবারই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এ দিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়ে জখম ও মৃতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করে। সেই দলে ইশা ছাড়াও ছিলেন কংগ্রেসের আর এক বিধায়ক মোস্তাক আলম। তাঁরা এলাকাও ঘুরে দেখেন। সুজাপুরের এই অঞ্চলে প্রায় ৫০টি প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। সেগুলি সবই এ দিন বন্ধ ছিল। তবে স্থানীয় মানুষের অনেকেই জানান, এমন ধরনের কোনও বিস্ফোরণ তাঁরা এত দিন দেখেননি। কংগ্রেস প্রতিনিধিরা স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন। এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন বিজেপির কিষান মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীও। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
পাশের জেলা মুর্শিদাবাদের প্রসঙ্গে টেনে শ্রীরূপা দাবি করেন, ‘‘সেই জেলা থেকে তো জঙ্গি কার্যকলাপে একাধিক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুজাপুরের ঘটনাও পুলিশ ধামাচাপা দিতে চাইছে। আমরা তাই দাবি করছি, এনআইএ-কে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।’’ কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিতে তদন্তের দাবি তুলে এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যা পরপর চলছে, তাতে কেউ এ রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি তুলতেই পারেন।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র ব্রাত্য বসু এর জবাবে বলেন, ‘‘এ বছর ২০ জুন গুজরাতে এমনই এক বিস্ফোরণে চার জন মারা গিয়েছিলেন। সেটাকে কিন্তু দুর্ঘটনাই বলা হয়েছিল।’’ রাষ্ট্রপতি শাসন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘হিম্মত থাকলে দিলীপবাবুরা ৩৫৬ প্রয়োগ করে দেখান ।’’
বিজেপির এই জঙ্গি যোগের তত্ত্বের তীব্র বিরোধিতা করেছে কংগ্রেসও। ইশা খান আগেই বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি গরিব শ্রমিকদের পরিবারে পাশে না দাঁড়িয়ে ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছে।’’ এ দিন মোস্তাক আলম বলেন, “বিজেপি সুজাপুরকে বদনাম করার জন্য বোমার প্রসঙ্গ তুলে রাজনীতি করছে। রাজ্যপালও তাদের সুরে সুর মেলাচ্ছেন। এখানে বিজেপি ও রাজ্যপালের উচিত অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।”