Adhir Chowdhury on Mahua Moitra

মহুয়ার পাশেই অধীর, ‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ নিয়ে কী বললেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা?

রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে মহুয়ার পাশে অধীরের দাঁড়ানোকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। সিপিএম অবশ্য সরাসরি মহুয়ার পাশে দাঁড়ায়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:০৪
Share:

(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র, অধীর রঞ্জন চৌধুরী (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে ঘিরে বিতর্ক যখন ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে, তখন তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আনন্দবাজার অনলাইনকে অধীর বলেন, ‘‘আমি মনে করি না মহুয়া মৈত্র কোনও ভুল করেছেন। সাংসদ প্রশ্ন তুলবেনই। কিন্তু অপছন্দের প্রশ্ন হলে তাঁর মুখ বন্ধ করা হবে এটা কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় হতে পারে না।’’ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ আরও বলেন, ‘‘কোনও সরকারের উচিত নয় কোনও একজন বা দু’জন শিল্পপতির পাশে দাঁড়ানো।’’

Advertisement

মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। অভিযোগ, দুবাই-কেন্দ্রিক ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে নেওয়া অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে মহুয়া লোকসভায় গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম জুড়ে দিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। স্পিকারের কাছে মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার আর্জিও জানিয়েছেন নিশিকান্ত। এর পাশাপাশি, আইনজীবী তথা মহুয়ার এক সময়ের বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাই তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন। মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখতে লোকসভার এথিক্স কমিটিকে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন স্পিকার।

এই বিতর্ক অন্য মাত্রা পেয়েছে বৃহস্পতিবার। ওই দিন হীরানন্দানির একটি হলফনামার বয়ান সামনে এসেছে। তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের অভিযোগ স্বীকার করে ‘হলফনামা’য় হীরানন্দানি জানিয়েছেন, তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তোলাতেন সংসদে। মহুয়া পাল্টা বলেছেন, যে বয়ান প্রকাশ্যে এসেছে, তা কি আদৌ হীরানন্দানির লেখা? না কি সেই বয়ানের খসড়া তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতর (পিএমও) থেকে? মহুয়ার বক্তব্য, হীরানন্দানির ‘হলফনামা’ সাদা কাগজে লেখা হয়েছে। তাতে কোনও ‘অফিশিয়াল লেটারহেড’ বা ‘নোটারি’ করা নেই। তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, মাথায় বন্দুক ঠেকানো না-হলে কি হীরানন্দানির মতো এক জন সম্মাননীয় এবং শিক্ষিত ব্যবসায়ী কখনও এ রকম সাদা কাগজে সই করবেন?

Advertisement

অধীর অবশ্য এ সবের মধ্যে ঢুকতে চাননি। তিনি সংসদে প্রশ্ন করার অধিকারের মৌলিক জায়গাটিতেই থাকতে চেয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা বলেছেন, ‘‘এক জন সাংসদ তো সংসদে প্রশ্ন তুলবেনই। কিন্তু পছন্দ নয় বলেই মুখ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার প্রবণতা গণতান্ত্রিক নয়।’’ প্রসঙ্গত, হীরানন্দানির ‘হলফনামা’য় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং শশী তারুরের কথাও উঠে এসেছে।

রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে মহুয়ার পাশে অধীরের দাঁড়ানো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে। যদিও সিপিএম সরাসরি মহুয়ার পাশে দাঁড়ায়নি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যে যেমন তৃণমূল বিরোধীদের কথা বলতে দিতে চায় না, তেমন দিল্লিতে বিজেপি-ও তাই। নকশাটা একই।’’

প্রসঙ্গত, নিশাকান্তকে আগামী ২৬ অক্টোবর ডেকে পাঠিয়েছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। কিন্তু মহুয়াকে এখনও ডাকেনি। আবার আইনজীবী জয় যে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে তাঁকেও ডাকেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। যা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে মহুয়ার ঘনিষ্ঠ মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement