মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী অলকা লাম্বা (মাঝে) ও প্রদেশ সভানেত্রী সুব্রতা দত্ত (বাঁ দিকে)। বিধান ভবনে। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালি-কাণ্ডে এ বার কলকাতায় এসে সরব হলেন মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী অলকা লাম্বা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতারা যাঁরাই এসেছেন, তাঁরা সবাই ‘রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ’ হিসেবে তৃণমূল ও রাজ্য সরকার সম্পর্কে কোনও সমালোচনামূলক মন্তব্য করা থেকে এড়িয়ে গিয়েছেন। এমনকি, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ যাওয়ার সময়েও রাজ্যে ‘অন্যায়ের’ বিরুদ্ধে কোনও কথা শোনা যায়নি তাঁর মুখে। তবে শনিবার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অলকা সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতাদের’ পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুব্রতা দত্তকে পাশে বসিয়ে অলকা সন্দেশখালি-কাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। সন্দেশখালি-সহ দেশের যেখানেই এমন ঘটবে, নির্যাতিতাদের ন্যায়ের জন্য লড়াই করবে মহিলা কংগ্রেস। আইনি পরামর্শ দেওয়া-সহ সব সহযোগিতা করা হবে। অর্থ, ক্ষমতাকে ব্যবহার করে আমাদের বোন, মেয়েদের যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।” দোষীদের কড়া শাস্তি চেয়ে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে তিন মাসের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করার আর্জিও জানান তিনি।
সম্প্রতি সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বিধানসভায় কিছু মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে অলকার তোপ, “এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এফআইআর করান।” পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এফআইআর না নিলে, প্রয়োজনে দিল্লি বা কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি থেকে সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের ‘জ়িরো এফআইআর’ দায়ের করতে সহায়তা করা হবে বলেও আশ্বাস অলকার।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে দলের প্রতিনিধিদের সন্দেশখালি যাওয়ার পথে আটকেছিল পুলিশ। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যের উদ্দেশে তাঁর তোপ, “গণতন্ত্রে কত দিন আপনারা আটকাবেন? আজ না হয় কাল পৌঁছবই। কত দিন বাঁচাবেন অপরাধীরা?” অপরাধীরা ‘ক্ষমতার আশ্রয়ে’ রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে বিরোধীদের বক্তব্যে আমল দেয়নি তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু এ দিন বলেন, “রাজ্য ইতিমধ্যেই হস্তক্ষেপ করেছে। রাজ্যের মহিলা কমিশন গিয়েছিল। সব রকম ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। একটা সমস্যা ওখানে হয়েছে, সেটা আমরাও বুঝতে পারছি। সরকার সমস্যাটা মেটাতে চাইছে। সরকার চাইছে, কেউ অন্যায় করলে পদক্ষেপ করতে। তা করাও হচ্ছে। কিন্তু বিরোধীরা বিষয়টা থেকে সুবিধা নিতে চাইছে।”
প্রসঙ্গত, জাতীয় স্তরেও সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, যা ঘটেছে বলে অভিযোগ, তা মানা যায় না। নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।