সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী— নিজস্ব সংবাদদাতা।
সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগে একই সঙ্গে বিজেপি এবং ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-কে বিঁধলেন অধীর চৌধুরী। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বুধবার বহরমপুরে বলেন, ‘‘বিজেপি-র রাজনীতির মূল লক্ষ্য দেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন। মিম-ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয়।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস দফতরে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতির একাধিক বিষয়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন অধীর। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় স্বাধীনতা পর কখনও আমরা দেখিনি সাম্প্রদায়িক এবং জাতপাতের রাজনীতি। এটা নতুন অভিজ্ঞতা। সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি পরে আসবে জাতপাতের রাজনীতি। কে ব্রাহ্মণ, কে শুদ্র সেই প্রসঙ্গ আসবে। তাই বাংলার নাগরিক সমাজকে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। ৮০ শতাংশের উপর হিন্দু জনসংখ্যা। ১৫-১৬ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা। যদি মুসলিম সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মাথা ছাড়া দেয়, তা হলে সবচেয়ে লাভ হবে সাম্প্রদায়িক বিজেপি-র। আজকে যারা দেশের ক্ষমতায় এসেছে, তাদের রাজনীতি মূল ভাবধারা দেশের সাম্প্রদায়িককরণ। ধর্মীয় মেরুকরণ যদি একটি শাসক দলের নীতি হয়, তবে তা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।’’
বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের প্রসঙ্গ তুলে অধীরের মন্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার পর কখনও পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চল ছিল না। আজকে বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিতে ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছি। বিজেপি চাইছে হিন্দুদের জন্য যে দলটি হবে সেটি ভারতীয় জনতা পার্টি। আর মুসলিম সাম্প্রদায়িক দল যদি মনে করে তাদের ইচ্ছা মত মেরুকরণের রাজনীতি করবে, তা হলে বিজেপি-র হাতই শক্ত হবে।’’
বহরমপুরের সাংসদ বুধবার দাবি করেন, গত ১০০ বছর ধরে সঙ্ঘ পরিবারের সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি ঠেকিয়ে রেখেছিল কংগ্রেস। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ, উদার রাজনীতি করেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবিলা করতে আর একটা সাম্প্রদায়িক শক্তি নয়, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবিলা করতে একটা ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি প্রয়োজন। মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ সকলেই থাকবেন। যেমন এত দিন ছিলেন। ভারতবর্ষকে রক্ষা করতে কংগ্রেসের মতো ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির প্রয়োজন।’’