মহিলা কংগ্রেসের বৈঠকে কলকাতায় সুস্মিতা দেব। নিজস্ব চিত্র।
শুধু জোটে সম্মতি দেওয়াই নয়। বামেদের সঙ্গে জোটের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এ বার কংগ্রেসের কমিটি ঠিক করে দিতে পারে এআইসিসি। আসন-ভাগের প্রক্রিয়া কোথায় কী ভাবে চলছে, তার উপরে এ বার নজর রাখতে চান কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বামেদের সঙ্গে জোটের বিষয়ে দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এআইসিসি ওই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে চায়। তার আগে তারা কথা বলছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও। এআইসিসি-র দুই নেতা জিতিন প্রসাদ ও রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দু’দিন ধরে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জোট-প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনা সেরেছেন। এআইসিসি-র তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হবে, তা নিয়েও পরামর্শ নিয়েছেন তাঁরা। রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা তাঁদের বলেছেন, বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে যে ভাবে দল ভাঙানোর খেলা শুরু হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দু’দল সম্পর্কেই ‘বিতৃষ্ণা’ তৈরি হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাম ও কংগ্রেস জোর কদমে ময়দানে নামলে সুফল পেতে পারে। জিতিনেরাও এই মতে সায় দিচ্ছেন।
কংগ্রেসের রাজ্য, জেলা ও শাখা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কলকাতায় সদ্যই বৈঠক করে গিয়েছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন। তখনই তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন, বামেদের সঙ্গে জোটে এআইসিসি-র চূড়ান্ত সিলমোহর শুধু সময়ের অপেক্ষা। দিল্লি ফিরে তাঁর রিপোর্টের পরে বল আরও গড়িয়েছে। গত বারের বিধানসভা ভোটে ‘অর্দ্ধসিদ্ধ’ সমঝোতা এবং লোকসভা নির্বাচনে রফা ভেস্তে যাওয়ার অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এ বার গোড়া থেকেই হাল ধরতে চাইছে এআইসিসি। যৌথ আন্দোলন ও পাকাপোক্ত জোটের পক্ষে সওয়াল করে প্রদেশ কংগ্রেস সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলছেন, ‘‘তৃণমূল আগে বিরোধীদের দল ভাঙিয়েছে। এখন তৃণমূলে যাঁরা নানা ভাবে ছড়ি ঘুরিয়েছেন, যাঁরা নানা ঘটনায় অভিযুক্ত, তাঁদের দলে নিচ্ছে বিজেপি। আবার তৃণমূলও পাল্টা করছে। একই দোষে অভিযুক্ত তৃণমূলের পক্ষে বিজেপির মোকাবিলা সম্ভব নয়। বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপি, দু’টোরই প্রকৃত বিকল্প হতে পারে কংগ্রেস ও বাম জোট।’’
এই আবহেই সোমবার কলকাতায় এসে বিজেপি ও তৃণমূল, দুই শাসক দলকেই একসঙ্গে আক্রমণ করে বাংলায় ‘গণতন্ত্র বাঁচানো’র লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব। দলীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে জোটের পথ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা এ বার আরও বেশি করে রাজ্যে আসবেন। মৌলালি যুব কেন্দ্রে এ দিন প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী বৈঠকে সুস্মিতার সঙ্গে ছিলেন মহিলা কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক নিত্যা ডি’সুজা, রাজ্য সভানেত্রী সুব্রতা দত্ত, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী, প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় প্রমুখ। সুস্মিতা বলেন, বাংলাতেও মহিলাদের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কিন্তু হাথরস-কাণ্ড যাদের রাজ্যে ঘটেছে, সেই বিজেপির এই ব্যাপারে প্রতিবাদ মানায় না।