ফাইল চিত্র।
সিঙ্গুর থেকে টাটার বিদায়ের স্মৃতি এখনও মোছেনি। রাজ্যে নতুন শিল্পের বার্তা তেমন কিছু নেই। বিনিয়োগে কিছু সংস্থা উৎসাহ দেখিয়েছে ঠিকই। কিন্তু বহু মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে, এমন কোনও নতুন কারখানার দরজা সাম্প্রতিক কালে খোলেনি। রাজ্যে শিল্পের এই বেহাল দশার প্রতিবাদে এবং নতুন শিল্পের দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে পদযাত্রায় নামছে প্রদেশ কংগ্রেস।
কংগ্রেসের পদযাত্রা প্রথম দফায় চার দিন ধরে চলবে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। দমদম পার্ক থেকে আজ শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর তা শেষ হওয়ার কথা কাঁচরাপাড়া এলাকায়। কংগ্রেসের পরবর্তী গন্তব্য হাওড়া শিল্পাঞ্চল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীই ওই পদযাত্রার সূচনা করবেন। শিল্পের দাবিতে পথে নামার আগের দিন, বৃহস্পতিবার অধীরবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যটা শিল্পের মরুভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। বন্ধ কারখানা খোলার লক্ষণ নেই, নতুন শিল্প আসার খবর নেই। রাজ্যে শুধু খেলা, মেলা আর কার্নিভাল! আমরা বলছি, কার্নিভাল তো অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু সারভাইভাল আগে দরকার। তাই আমাদের পদযাত্রা।’’
বিগত বিধানসভা ভোটের আগে শিল্পের দাবিতেই সিঙ্গুর থেকে শালবনি জাঠা করেছিল বামেরা। এ বার কালীপুজোর পরে বাম গণসংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ বিপিএমও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে যে পদযাত্রা শুরু করবে, তারও অন্যতম দাবি রাজ্যের বন্ধ কলকারখানা খোলা এবং শিল্পের বন্ধ্যত্ব ঘোচানো। কংগ্রেসের পদযাত্রা এবং তার পরে বামেদের কর্মসূচি বুঝিয়ে দিচ্ছে, শিল্পের দাবিতে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে সক্রিয় হচ্ছে বিরোধীরা। কর্মপ্রত্যাশী তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছনোই তাদের লক্ষ্য। বিরোধীদের বক্তব্য, শুধু শিল্পের দাবিই নয়। স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শুরু করে যে কোনও নতুন নিয়োগেই যে জটিলতা এবং দুর্নীতি চলছে, তার প্রতিবাদেও তাদের কর্মসূচি চলবে।
পথে নামার কথা ঘোষণা করে অধীরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘এর পরে যাব হাওড়া শিল্পাঞ্চল। তার পরে জঙ্গলমহল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, জঙ্গলমহল হাসছে। জঙ্গলমহল হাসছে না কাঁদছে, আমরা দেখতে যাব!’’ পরিষেবা দিতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকেও এ দিন বিঁধেছেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, ডেঙ্গি মহামারীর আকার নিয়েছে। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। অথচ রাজ্য সরকার ডেঙ্গি স্বীকার করতেই নারাজ! পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে কিছু রাজ্য যখন সেস বা অন্য কর তুলে নিচ্ছে, ‘মা-মাটি-মানুষে’র সরকার কেন সেই পথে হাঁটছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
জেলা থেকেই কলকাতায় আগামী ২৩ ডিসেম্বরের পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করছে কংগ্রেস। এই লক্ষ্যে প্রদেশ স্তরে একটি পঞ্চায়েত কমিটি হয়েছে বিধানসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা নেপাল মাহাতোকে চেয়ারম্যান করে। কমিটির যৌথ আহ্বায়ক করা হয়েছে আখরুজ্জামান ও শঙ্কর মালাকারকে। অধীরবাবু জানিয়েছেন, রাহুল গাঁধীকে নেতাজি ইন্ডোরের ওই সম্মেলনে নিয়ে আসার চেষ্টা হবে।