(বাঁ দিকে) কংগ্রেসের ইস্তাহার প্রকাশ করছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বহরমপুরে। (ডান দিকে) পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য এসএফআইয়ের আবেদনপত্র প্রকাশ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ‘পঞ্চশীল গ্যারান্টি’ সামনে নিয়ে এল কংগ্রেস। পাঁচ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রকাশিত হল প্রদেশ কংগ্রেসের পঞ্চায়েত ইস্তাহার। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘হাত ধরো, গ্রাম গড়ো’। পঞ্চশীল ঘোষণার মধ্যে ‘কাটমানি-হীন, দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার আশ্বাসের পাশাপাশিই ঘোষণা করা হয়েছে, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র ৫০০ টাকা নয়, কংগ্রেস-শাসিত অন্য রাজ্যের মতো এ রাজ্যেও মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে মাসিক ২০০০-২৫০০ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
দুর্নীতিমুক্ত এবং মানুষের সহযোগিতায় পরিচালিত পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কথাই বলেছে কংগ্রেস। পঞ্চায়েতে প্রচারের ফাঁকেই বামফ্রন্ট এবং বিজেপি তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে রাজ্য সদর দফতরে। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বৃহস্পতিবার বহরমপুরেই ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন এবং মনে করিয়ে দিয়েছেন, মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর ভাবনা ছিল গ্রাম স্বরাজ। আর প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সাংবিধানিক ভাবে পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থা গোটা দেশে চালু করেছিলেন। সেই লক্ষ্যেই কংগ্রেস এগোতে চায় জানিয়ে অধীরের বক্তব্য, ‘‘কিন্তু বাংলায় এখন পঞ্চায়েত লুটের আখড়া হয়েছে তৃণমূলের দৌলতে! পার্টির লোকেদের করে-কম্মে খাওয়ার হাতিয়ারে রূপান্তরিত হয়েছে। আমরা চাই, মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দিতে।’’ তাঁর নিজের জেলার উদাহরণ দিয়েই অধীর বলেছেন, ২০০৩ সালেই কংগ্রেস মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ দখল করেছিল। তাঁর দাবি, একটা জেলার মধ্যেই সেই সময়ে ১২০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা হয়েছিল কেউ দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি। এই সূত্রেই তাঁর সংযোজন, ‘‘গোটা বাংলায় এখন একটাই আলোচনা, দুর্নীতি আর দুর্নীতি! আমাদের একটাই আবেদন, এক বার আমাদের সুযোগ দিন। আমরা বলেছি, হাত ধরো, গ্রাম গড়ো।’’
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কংগ্রেস প্রার্থী দিতে পেরেছে কত শতাংশ আসনে যে, তারা রাজ্যের জন্য ইস্তাহার করছে? তা ছাড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র মতো প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ করে এখন আবার সেই আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাই বলছে। মানুষ জেরক্স কেন নেবেন? আসলটাই রাখবেন!’’
একই দিনে কলকাতার দীনেশ মজুমদার ভবনে এসএফআই পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে একটি আবেদনপত্র প্রকাশ করেছে। বামফ্রন্টের মূল ইস্তাহারের বাইরে ছাত্র সংগঠনের আবেদনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু তুলনামূলক আলোচনা ও আশ্বাস রয়েছে। পঞ্চায়েতে ছাত্র সংগঠনের এমন উদ্যোগ এই প্রথম। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রামের মানুষের সাহায্য নিয়ে পাঁচ বছরের বেশি সব শিশুকে স্কুলে ভর্তি করা, স্কুলছুটের প্রবণতা বন্ধ ও গ্রাম শিক্ষা কমিটি গড়া হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সরকারি সামাজিক প্রকল্প অতীতে যেমন ছিল, তার প্রসার বাড়ানো হবে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এ বার ছাত্র ও যুব আন্দোলনের অনেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ছেন। ছাত্র সমাজের কথা মাথায় রেখেই আমরা এই আবেদনপত্র তৈরি করেছি।’’