অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কলকাতায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
সাগর থেকে এসে কলকাতার পথে বর্ণময় হয়ে উঠল প্রদেশ কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’। কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি পদযাত্রা সংযুক্ত হলেন বিশিষ্ট জনেদের একাংশও। শহরের পথে সাড়া দেখে উৎসাহিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও অন্য নেতারা।
তারাতলা মোড় থেকে সোমবার পদযাত্রা শুরু হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের তরফে দেবর্ষি রায়চৌধুরী বই এবং স্মারক দিয়ে পদযাত্রার প্রতি সংহতি জানান। পথে নেতাজি ভবনে সুভাষচন্দ্র বসু এবং হাজরায় চিত্তরঞ্জন দাশমুন্সির মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান প্রদীপ প্রসাদ, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়েরা। প্রদেশ কংগ্রেসের দফতর বিধান ভবনে পৌঁছে প্রথম দফা পদযাত্রা শেষ হয়। এর পরে বিধান ভবন থেকে সিমলা স্ট্রিটে বিবেকানন্দের বাড়ি হয়ে পদযাত্রা যায় শ্যামবাজার পর্যন্ত। এই পর্বে অধীরবাবু, এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লাকুমার, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যদের পাশাপাশি হেঁটেছেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, শ্রীলেখা মিত্রেরা। যাঁরা নাগরিক সমাজের বামপন্থী মুখ বলেই পরিচিত, বামেদের কর্মসূচিতেই তাঁদের দেখা যায়। শ্যামবাজারে অধীরবাবুর সভায় ধর্মীয় ভেদাভেদের বিরুদ্ধে বার্তা নিয়ে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক কুণাল সরকারও। শ্রীলেখা বলেন, ‘‘আমি সিপিএমের দলীয় সদস্য নই। কাল কংগ্রেসেও যোগ দিচ্ছি না! এই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র উদ্দেশ্য ভাল। একমত হয়েছি, তাই এসেছি।’’ রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্রও ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সমর্থনে বার্তা দিয়েছেন।
শহরের পথে এ দিন পদযাত্রা উপলক্ষে ছৌ নাচ, রণ-পা, ফুটবল-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গের ব্যবস্থা রেখেছিলেন মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুমন পাল। তাঁর দাবি, ‘‘কলকাতায় যে ভাবে কর্মী-সমর্থকেরা অংশগ্রহণ করেছেন, যে ভাবে সাধারণ মানুষ সাড়া দিয়েছেন, তা অভাবনীয়।’’ ছিলেন উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি রানা রায়চৌধুরী, শুভঙ্কর সরকার, তপন আগরওয়াল, তুলসী মুখোপাধ্যায়, কৌস্তুভ বাগচী, সৌরভ প্রসাদ, কৃষ্ণা দেবনাথ, সুব্রতা দত্তেরা। শ্যামবাজারের সভায় মূল্যবৃদ্ধি, অর্থনীতি ও বেকারত্বের প্রশ্নে কেন্দ্র এবং দুর্নীতির প্রশ্নে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা শুরু করেছিল কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার। সকলের জন্য ঘর, একশো দিনের কাজের মাধ্যমে কর্মসংস্থান কারা করেছিল? তখন কাজের জন্য সবাই এই সব প্রকল্পের কথা শুনেছিল। এখন দুর্নীতির জন্য কেন্দ্র টাকা বন্ধ করছে, সেটা মানুষ জানছে!’’ পদযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন এনসিপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রবোধ সিংহও। তবে বামেদের কাউকে দেখা যায়নি। শ্যামবাজার থেকে পদযাত্রার ভার নিয়েছেন উত্তর কলকাতা জেলা (শহরাঞ্চল) সভাপতি তাপস মজুমদার।