(বাঁ দিকে) প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
পটনার জোট- বৈঠক শেষ না হতেই রাজ্য স্তরে চাপানউতোর শুরু হল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের। এই তরজায় জড়িয়েছে সিপিএমও। কংগ্রেস আর সিপিএম জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে তাদের লড়াই তৃণমূলের সঙ্গেও। তৃণমূল পাল্টা জবাব, এ রাজ্যে দুই দলই বিজেপির দালালি করছে। তা নিয়ে প্রস্তাবিত জোটের দুই পক্ষকে কটাক্ষ করে ‘সেটিং তত্ত্ব’ সামনে এনেছে বিজেপি।
শুক্রবারের ওই বৈঠক নিয়ে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা এখানে মমতার বিরুদ্ধে লড়াই করব। কারণ তিনি অপরাধী, অস্বচ্ছ। তাঁর কাছে আমরা ধর্মের বাণী শুনতে চাই না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মমতা বুঝেছেন, দেশের রাজনীতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে আগামিদিন কংগ্রেসের। তাই কংগ্রেসকে এখন থেকে ম্যানেজ করে রাখি।’’
একই ভাবে তৃণমূলের বিজেপি- বিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএমও। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘মমতা মিথ্যা বলছেন। তিনি নিজেই একসময় বলেছিলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে একা লড়বেন।’’ তৃণমূলও কংগ্রেস ও সিপিএমের এই মনোভাবকে পাল্টা আক্রমণ করেছে। রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কংগ্রেস ও সিপিএম বরাবর বিজেপির দালালি করছে। গত বিধানসভা ভোটে মিলিত ভাবে তৃণমূলকে হারিয়ে বিজেপিকে জেতানোর রাস্তা করে দিতে চেয়েছে। তাই তাদের কেন্দ্রীয় নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও রাজ্য নেতারা অর্থহীন বিরোধিতায় মজে আছেন।’’ তাঁর দাবি, তারপরেও রাজ্য বিজেপিকে রুখে দেবে তৃণমূলই।
বিরোধী- বৈঠকের শরিকদের পারস্পরিক এই বিরোধ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি- বিরোধী জোটের প্রস্তাবের দিকে ইঙ্গিত করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘খুবই গোলমেলে ব্যাপার। এ রাজ্যে কি ওরা (কংগ্রেস, সিপিএম ও তৃণমূল) বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলছে?’ সেই সঙ্গেই টুইট করে তিনি বলেছেন, ‘হতভাগ্য কংগ্রেস আর সিপিএমের কর্মীরা নীচেরতলায় রক্ত, ঘাম ঝরাচ্ছে আর তাঁদের উপরতলার নেতারা পটনায় সেটিং করছেন। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম এবং কংগ্রেস হল তৃণমূলের ‘বি টিম’। দিল্লিতে তৃণমূল আর সিপিএম কংগ্রেসের ‘বি টিম।’
কংগ্রেস ও সিপিএম পাল্টা আক্রমণ করেছে শুভেন্দু আর বিজেপিকেই। শুভেন্দুকে নিশানা করে অধীর বলেন, “ওই সব মহামানবের কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। আমরা যা করছি তা মানুষ দেখছেন।” সেলিম বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানে এত বেশি মারামারি, খুনখারাবি হত? কে করেছে? কে কার টিম বোঝা যায়।’’ কুণাল বলেন, ‘‘নিজেকে বাঁচাতে দল ছেড়েছেন শুভেন্দু। এ-ও দুর্ভাগ্যের!’’