সংঘর্ষ থামাতে লাঠিচার্জ পুলিশের। —নিজস্ব চিত্র।
মহলয়া থেকে অশান্তি চলছিল। বুধবার একাদশীর সকালেও কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল মালদহের চাঁচলের কলিগ্রাম প্রাণসাগর এলাকা। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা রেজাউল খানের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলই সন্ত্রাস কায়েম করতে চাইছে। গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন।
ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে এই সংঘাতের সূত্রপাত মহালয়ার দিন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। অভিযোগ, সে দিনই মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার সময় পঞ্চায়েত প্রধানের ভাই ইমরান খানের উপর বাঁশ, বাটাম নিয়ে হামলা চালায় কংগ্রেসের লোকজন। তার পর সপ্তমীতে ফের উত্তপ্ত হয় এলাকা। সে দিন আবার এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার ভোরে রেজাউলের পুরনো বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
শাসক নেতা তথা পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল বলেন, ‘‘আমরা বাজার-হাট করতে পারছি না। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই মারছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আমি পঞ্চায়েত প্রধান, অথচ আমিই তিন দিন ধরে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছি না। পুলিশকে বলছি, পুলিশ কিছুই করছে না। উল্টে আমাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’ রেজাউলের আরও অভিযোগ, কংগ্রেসের লোকজন তাঁর ভাইয়ের পুকুরে বিষ দিয়ে অন্তত ৩৫ কুইন্টাল মাছ মেরে ফেলেছে।
মালদহ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলালচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই কংগ্রেস, সিপিএম মিলে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে চাইছে। ভোটে হেরে গিয়ে তারা এখন হিংসার আশ্রয় নিচ্ছে।’’ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে দুলাল বলেন, ‘‘পুলিশ পুজো নিয়ে ব্যস্ত। সেটাও তাঁদের সামলাতে হচ্ছে। উৎসবের মরসুমে সব জায়গায় একসঙ্গে সামাল দেওয়া মুশকিল। তবে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’
স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, প্রধানের লোকজনই হামলা চালিয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয়েরা প্রতিরোধ গড়েছেন। বুধবার এ নিয়ে চাঁচল-আশাপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে তৃণমূল। পাল্টা জোটের কর্মীরাও তাঁদের দিকে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অবরোধ তুলে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ।