আহত পবিত্র। নিজস্ব চিত্র
বাঁ’হাতে আঘাত। তা বোমা না গুলির, ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও সেই ধোঁয়াশা কাটল না।
রবিবার খেজুরিতে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে বোমা-গুলি চলার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক পবিত্র দাস গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে সরব হন বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব। একই অভিযোগ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত তমলুক জেলা হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে বলতে পারেননি, পবিত্রর হাতে আঘাত ঠিক কীসের। সোমবার বিকেলেও তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি। জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাসের বক্তব্য, ‘‘পবিত্রর হাতের এক্স-রে করা হয়েছে। আঘাতের জায়গায় বহিরাগত বস্তু (ফরেন বডি) রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সেটি গুলি না বোমার স্প্লিন্টার তা স্পষ্ট নয়। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।’’
হাসপাতাল সুপার আরও জানান, হাতে যে বহিরাগত বস্তুটি গেঁথে রয়েছে, তা অস্ত্রোপচার করে বের করলে ক্ষত বাড়তে পারে। তাই এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। পবিত্রর অবস্থা স্থিতিশীল বলেও জানিয়েছেন সুপার। তবে রবিবার জেলা হাসপাতালের নিজস্ব এক্স-রে বিভাগ বন্ধ থাকায় পবিত্রর এক্স-রে করাতে দেরি হয় বলে অভিযোগ। জেলা হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি এক্স-রে সেন্টারে (পিপিপি মডেলে) সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ এক্স-রে করা হয়। এ নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও হাসপাতাল সুপারের দাবি, ‘‘ওই রোগীর এক্স-রে দ্রুতই করা হয়েছে।’’
বিজেপি নেতৃত্ব এ দিনও গুলির তত্ত্বেই অনড়। বিজেপি-র জেলা (কাঁথি) সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের বাহিনী বোমা ও গুলি নিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ চালায়। পবিত্রর গুলিই লেগেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে চিকিৎসকদের একাংশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে আমরা নিশ্চিত নই।’’ দিলীপ বলেন, ‘‘কাল পর্যন্ত তো গুলি বলেই জানতাম। বোমার কথা জানা ছিল না।’’ গোটা ঘটনায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন খেজুরির তৃণমূল বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তিন দশক বামেরা মিথ্যাচার করেছে। সেই বামেরা এখন বিজেপি করে। ওদের দাবি সত্যি হতে পারে না।’’
এ দিন দু’দলই অভিযোগ দায়ের করেছে। দুপুরে পবিত্রর বাবা বিভূতিভূষণ দাস ছেলেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ জানান খেজুরি থানায়। অন্য দিকে, পবিত্র-সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর নামে তৃণমূলের ছয় কর্মীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ জানান গোড়াহার জলপাই বুথের তৃণমূল সভাপতি সুদর্শন জানা। জেলার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুই পক্ষ থেকে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করবে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ মোতায়েনও রয়েছে।’’