রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর বিল রাজভবনে দশ মাসেরও বেশি আটকে থাকার পাশাপাশি নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সরকারি ফাইল রাজভবনে পড়ে আছে ছ’দিনেরও বেশি। বিষয় ও বিলম্বের সময়গত দৈর্ঘ্যের দিক থেকে দু’টির তুলনা হয় না। কিন্তু আচার্য সংক্রান্ত বিল যেমন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে, একই ভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ফাইল ঘিরে রীতিমতো ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত। বিশেষত বুধবার একটি অনুষ্ঠানের পরে খোদ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের একটি মন্তব্য থেকে পর্যবেক্ষকদের এই অনুমান জোরদার হয়েছে।
পরবর্তী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কয়েক দিন আগেই প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে বেছে নিয়েছিল নবান্ন। রাজভবনে সেই ফাইল পাঠানো হয়েছে রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য। কিন্তু প্রায় ছ’দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও তা নবান্নে ফেরত যায়নি বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। এ দিন রাজ্যপালকে প্রশ্ন করা হয়, রাজনৈতিক মহলে এই নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তিনি কী বলেন? বোস বলেন, “আমি রাজনীতির লোক নই। অপেক্ষা করুন এবং দেখতে থাকুন।”
বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের কার্যকাল শেষ হচ্ছে ২৯ মে। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, রীতি মেনে সেই দিনেই নতুন কমিশনারকে তাঁর দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। ফলে তার আগে নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের নাম চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। সৌরভ যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবেন না, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। কমিশন সূত্রের খবর, সেই দায়িত্ব বর্তাবে নতুন কমিশনারের উপরে। কিন্তু ওই পদে নিয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা কবে কাটবে, সেটাই স্পষ্ট হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা শীতে ভোটের পক্ষপাতী ছিলেন। তাই গত ফেব্রুয়ারিতে ভোট নিয়ে জল্পনা ছিল। চলতি মাসের শেষে ভোট করার একটি পরিকল্পনা হয়। এখন তা-ও আর সম্ভব নয়। কিছু দিন আগে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জুনে তাঁর কর্মসূচি শেষ হলে ভোট হবে। বিশেষজ্ঞেরা জানান, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা থেকে ভোটের দিনের মধ্যে ২১-৩৫ দিনের (ছুটির দিন বাদে) ব্যবধান রাখতে হয়। সেই দিক থেকে জুনের শেষ বা জুলাইয়ের গোড়ায় ভোট করাতে গেলে চলতি মাসের শেষ বা আগামী মাসের গোড়াতেই দিনক্ষণ ঘোষণা করা জরুরি।