প্রতীকী ছবি।
মাতৃভাষার ‘ভুল’ কয়েক ডজন গোল দেবে বিদেশি ভাষার ‘ভুল’-কে! শুনতে কিছুটা আশ্চর্য লাগলেও এটাই হচ্ছে ভোটার পরিচয়পত্র (এপিক) বা তালিকা সম্পর্কে মূল্যায়ন।
এই পরিস্থিতিতে একটিও ‘ভুল’ যাতে না-হয়, তা নিশ্চিত করতে দফায় দফায় তালিকা ও পরিচয়পত্র পরীক্ষার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ‘ভুল’-এর ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের শাস্তি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন কমিশন-কর্তারা।
সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে ইভিপি বা ভোটার তালিকা যাচাই কর্মসূচির পর্বে বঙ্গে আবেদনপত্র জমা পড়েছিল ১.৬০ কোটি। তার কাজ শেষ করে ভোটার পরিচয়পত্র বিলি শুরু হয়েছে। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে, দু’-একটি ক্ষেত্র ছাড়া ইংরেজি হরফে নাম, বয়স, সম্পর্কের নাম, ঠিকানা ঠিকঠাক রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ভুল হয়েছে মাতৃভাষা অর্থাৎ বাংলাতেই! কেন?
আরও পড়ুন: ছাত্ররা কারও দাস নয়: মমতা
অনেক সম্ভাবনা দেখছেন ভোটের কাজে অভিজ্ঞ অনেকে। ১) ইভিপি পর্বে অনলাইনে ইংরেজি হরফে লেখার পরে ‘অটোমেটিক ট্রান্সলেটর’ নামক ‘অপশন’-এ আঞ্চলিক ভাষায় তার অনুবাদের ব্যবস্থা ছিল। তাতেই সমস্যা বেড়েছে বলে অনেকের মত। সাইবার ক্যাফেতে কাজ দ্রুত করার জন্য ‘অটোমেটিক ট্রান্সলেটর’ ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। ২) ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ অনেক সময় দ্রুত কাজ শেষ করতে চান। সেই তাড়াহুড়োয় ‘ভুল’ হয়ে থাকতে পারে। ৩) ১.৬০ কোটি আবেদনপত্রের সংখ্যার চাপ (যা পাঁচ বছরের বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনীর প্রায় পাঁচ গুণ)।
এ ছাড়াও চলতি বছরে বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী পর্বে সংযোজন, সংশোধন, বিয়োজন মিলিয়ে ৮০ লক্ষের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এই বিপুল পরিমাণ আবেদনপত্রের দ্রুত নিষ্পত্তি করতে গিয়েই অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকে। সে-ক্ষেত্রে কমিশন-কর্তাদের বক্তব্য, আবেদনপত্রের নিরিখে ভুল হয়তো এক শতাংশের কম। একটিও ভুল যাতে না-থাকে, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আবেদনপত্র জমা থেকে নিষ্পত্তির পরে তা দেখে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে ভোটের কাজে যুক্ত কর্মী-আধিকারিকদেরও ‘ভুল’ হয়েছে। সে-ক্ষেত্রে নতুন করে ওই তালিকা ঠিক করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে ‘বাধ্য’ হয়েছেন ‘ভুলের’ সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মী-অফিসারেরা।