Air Pollution In India

দিল্লির দূষণ নিয়ে নাজেহাল কেন্দ্র, সব রাজ্যকেই চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক

উদ্বেগপ্রকাশ করে সব রাজ্য তথা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ওই চিঠিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ-সহ রাজ্য তথা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেও উন্নত করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

অমিত রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:২৯
Share:

রাজ্যগুলিকে পাঠানো কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিঠি। —সংগৃহীত।

রাজধানী দিল্লির অপর্যাপ্ত দূষণ চিন্তা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু উদ্বেগের আওতায় রয়েছে সারা দেশের পরিবেশ। সদ্যসমাপ্ত উৎসবের মরসুমে গোটা দেশ জুড়ে বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সমস্ত রাজ্য তথা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সাধারণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেও ‘উন্নত’ করতে বলা হয়েছে। দূষণজনিত সমস্ত রোগের মোকাবিলা করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে সব ব্যবস্থা রাখতে বলেছে কেন্দ্র।

Advertisement

ওই মর্মে চিঠি এসে পৌঁছেছে নবান্নেও। সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে চিঠিটি পাঠিয়েছেন সচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘গত কয়েক বছরে দেশের বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা বেড়ে গিয়েছে। বায়ুদূষণের প্রভাবে শুধুমাত্র তীব্র অসুস্থতাই নয়, শ্বাসযন্ত্র প্রভাবিত হয়ে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি, কার্ডিয়োভাস্কুলার এবং সেরিব্রোয়ার ভাস্কুলার সিস্টেমেও বড়সড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমন সব রোগের মোকাবিলা করতে এখন থেকেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরগুলি উদ্যোগী নিক।’

বস্তুত, শীতের মরসুমে বায়ুদূষণ যে আরও বড় আকার নিতে পারে সেই বিষয়েও আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের চিঠিতে। দূষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গত ১৯ অক্টোবরেও একটি চিঠি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই চিঠিতে বলা বেশ কিছু পদক্ষেপকে এই চিঠিতেও বলা হয়েছে অনুসরণ করতে। স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পরিবেশদূষণ সংক্রান্ত রোগের মোকাবিলার ‘উপযোগী’ করে তোলার পাশাপাশি স্থানীয় ভাষায় জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিও নিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব। কারণ, বায়ুদূষণ থেকে যে সব রোগের প্রকোপ হয়, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং প্রবীণদের। তাই বায়ুদূষণ রোধ-সহ সেই সব রোগে আক্রান্ত হলে কী করণীয়, তা-ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরগুলিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শহর বা শহরতলি নয়, আগামী দিনে যে এই দূষণের প্রকোপ রাজ্যের গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতেও থাবা বসাবে, সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। তাই ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হিউম্যান হেল্‌থ’ (এনপিসিসিএইচএইচ)-এর অধীনে শহরতলি এবং জেলার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করতে বলা হয়েছে। কারণ, যে ভাবে পরিবেশের চরিত্র বদলাচ্ছে, তাতে এই ধরনের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করে রাখা আবশ্যিক বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লিতে দূষণের মাত্রা যে ভাবে ছড়িয়েছে, তাতে ‘উদ্বিগ্ন’ কেন্দ্র দেশের অন্যান্য প্রান্তের দূষণ রোধ করতে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারকে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বলেছে। চিঠির সারমর্ম তেমনই বলে মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকেরা।

প্রসঙ্গত, কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে শারদোৎসব থেকে শুরু উৎসবের মরসুম বায়ুদূষণের মাত্রা ছাড়িয়েছে। কলকাতা পুরসভা শব্দবাজি ফাটানোকেই দূষণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সম্প্রতি কলকাতার দূষণবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বীকারও করে নিয়েছেন যে, অক্টোবর মাসে শহরে বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘ওয়াটার ক্যানন’-সহ অন্যান্য প্রযুক্তি দিয়ে খুব শীঘ্রই সেই বায়ুদূষণের পরিমাণ কমানো গিয়েছে। ময়দান লাগোয়া রেড রোড-সহ বড় রাস্তাগুলিতে সকালে জল ছড়ানোর কাজ শুরুও করেছে কলকাতা পুরসভা। সে কাজ দৈনিকই করা হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement