গত বছর পর্যন্ত তিন বছরের যে-জেনারেল কোর্স চালু ছিল, তার পরিবর্তিত নাম কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তো জোরদার হয়েছেই। প্রতীকী ছবি।
স্নাতক স্তরে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম পড়ে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের ডিগ্রির প্রস্তাবিত নাম নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই পুরনো পাঠ্যক্রমের নামকরণের বিষয়টি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। গত বছর পর্যন্ত তিন বছরের যে-জেনারেল কোর্স চালু ছিল, তার পরিবর্তিত নাম কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তো জোরদার হয়েছেই। সেই সঙ্গে ভর্তিই বা কী ভাবে হবে, সেই বিষয়ে অধ্যক্ষ মহল রীতিমতো ধোঁয়াশায়।
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চশিক্ষা সংসদ সোমবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে। কিন্তু সেখানেও এই বিষয়ে অভিন্ন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চার বছরের পাঠ্যক্রমের জন্য ভর্তি নিতে চাইছে। সেই সঙ্গে কোনও পড়ুয়া চাইলে যাতে তিন বছরে বেরিয়ে যেতে পারেন, তেমন নিয়ম করা হবে।
প্রথম দিকের নানান প্রশ্ন এবং পরিকাঠামোগত সমস্যার দরুন আপত্তি সরিয়ে রেখে রাজ্যের তৃণমূল সরকার শেষ পর্যন্ত চলতি বছরেই চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় সব শাখার ডিগ্রির নামে বিজ্ঞান কথাটি যোগ করার মতো বেশ কিছু বিষয়ে জট-সংশয় থেকেই গিয়েছে। এ দিন উচ্চশিক্ষা সংসদের বৈঠকে চার বছরের পাঠ্যক্রমের ক্ষেত্রে অনার্স ডিগ্রি বা অনার্স উইথ রিসার্চের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু তিন বছরের জেনারেল কোর্স নিয়ে সংশয় থেকেই গিয়েছে বলে শিক্ষা শিবিরের খবর। রাজ্যের অধিকাংশ কলেজে বহু কাল ধরে অনার্স এবং জেনারেল পাঠ্যক্রমের পঠনপাঠন চলে আসছে। অনার্সে ভর্তির তুলনায় জেনারেল পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে নম্বরের চাহিদা স্বভাবতই কম থাকত। অনার্সের আসন-সংখ্যা নির্দিষ্ট, কিন্তু জেনারেলের ক্ষেত্রে তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া হত। এই পরিস্থিতিতে চার বছরের পাঠ্যক্রমে ঢালাও ভাবে সকলকে ভর্তি নিলে সমস্যা হবে বলে অধ্যক্ষ শিবিরের একাংশের আশঙ্কা। উঠছে মেধা-ভেদে পাঠসমস্যার কথাও।
পশ্চিমবঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি এ দিন বলেন, ‘‘এ-রকম হলে তো মেধার ভিত্তিতে ক্লাসের আলাদা আলাদা বিভাগ তৈরি করতে হবে। এমন পদ্ধতি মোটেই বাস্তবসম্মত নয়।’’ কয়েক জন অধ্যক্ষের বক্তব্য, সম-মেধার পড়ুয়া না-হলে সমস্যা হবে। একই সঙ্গে সকলকে পড়ানো হলে কিছু ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়তে পারে। লেডি ব্রেবোর্নে জেনারেল পাঠ্যক্রম নেই, শুধুই অনার্স। ওই কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বলেন, ‘‘যেমনই সিদ্ধান্ত হোক, ভর্তির বিষয়ে অতি দ্রুত স্পষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন।’’